বাংলার প্রিয়তম কৈশোর
আজ আমাদের মধ্যে থাকলে তাঁর বয়স হতো ৯৩। বহুমুখী প্রতিভা বললেও কম বলা হয় তাঁকে। মানুষ হিসেবে জনসাধারণের চিন্তা করার ক্ষমতা বা পরিসরের বাইরে ছিল তাঁর বাস। তিনি আমাদের কিশোর, বাঙালির শ্রেষ্ঠ এবং প্রিয়তম চিরকৈশোর কিশোর কুমার গাঙ্গুলি।
কিশোর কুমারের জন্ম ১৯২৯ সালে মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়ায়। পিতা কুঞ্জলাল গঙ্গোপাধ্যায় পেশায় ছিলেন আইনজীবী। চার ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন কিশোর। অশোক কুমার সবার বড়, তারপর দিদি সতী দেবী, তারপর অনুপ কুমার ও সর্বকনিষ্ঠ তিনি। ছোটবেলায় তাঁর নাম ছিল আভাস কুমার গঙ্গোপাধ্যায়।
কিশোরের গাওয়া ‘আকে সিধি লাগি দিল পে’ গানটির কথা সবার জানা, যেখানে ছেলে ও মেয়ের গলায় গেয়েছেন কিশোর কুমার। তবে মেয়ের অংশটি গাওয়ার কথা ছিল লতা মঙ্গেশকরের।
একবছরের জন্য ভারতীয় রেডিও ও দূরদর্শন ব্যান করেছিল কিশোর কুমারকে কারণ ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে জাতীয় কংগ্রেসের সভায় গাইতে বলা হয়েছিল কিশোরকে, যা তিনি নাকচ করেন, এবং তারপরই ব্যান করা হয় তাঁকে।
রাজেশ খান্না ও অমিতাভ বচ্চন অভিনীত বিখাত্ত ‘আনন্দ’ প্রথমে করার কথা ছিল কিশোর ও মেহমুদের। কিন্তু পরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় যখন ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে কথা বলতে যান তাঁকে পূর্বের টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিবাদের কারণে অপমান করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন কিশোর।
শেষ জীবন একা কাটিয়েছেন ভারতের চির-নতুন এবং বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে নিজের একাকীত্বের কথা বলতেন তিনি। ১৯৮৭ সালের ১৩ই অক্টোবর মুম্বইতে আমাদের ছেড়ে চলে যান তিনি।