এখনো অভিষেকের গড়ে প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছেনা বিজেপি
প্রথম তালিকায় বাংলার ২০জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বিজেপি, যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে পলায়ন করেন আসানসোলের প্রার্থী বাংলায়-বিদ্বেষী পবন সিং। দ্বিতীয় তালিকায় ১৯জনের নাম ঘোষণা করে গেরুয়া শিবির। কিন্তু এখনো তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ডায়মন্ড হারবার আসনে কোনো প্রার্থীই খুঁজে পায়নি তারা। হন্যে হয়ে টর্চ নিয়ে প্রার্থী খুঁজতে নেমেছে পদ্মশিবির, যিনি অভিষেকের বিরুদ্ধে লড়বেন। ডায়মন্ডহারবার, বীরভূম এবং ঝাড়গ্রামের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা যায়নি বিজেপির পক্ষ থেকে। চূড়ান্ত ধোঁয়াশা রয়েছে আসানসোল নিয়েও। এর মধ্যে আসানসোল আর ঝাড়গ্রাম ২০১৯এ বিজেপির জেতা আসন। নির্বাচনের প্রাক্কালে এরকম বিপাকে পড়া ঘাম ছুটিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বিজেপির।
দিলীপের হয়ে প্রচার করবেন না আলুওয়ালিয়া
মেদিনীপুর থেকে টেনে এনে দুর্গাপুর থেকে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। গতবার দার্জিলিং থেকে নিয়ে এসে সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াকে প্রার্থী করে জিতিয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু প্রবীণ এই শিখ নেতাকে এখনো কোনো টিকিট দেয়নি বিজেপি, যার জেরে তিনি একপ্রকার বুঝিয়ে দিয়েছেন যে দিলীপ ঘোষের প্রচারে তিনি থাকবেন না। দিলীপ অবশ্য জানিয়েছেন যে বর্তমান সাংসদ আসবেন ও পাঁচ বছরের কাজের খতিয়ান তুলে ধরবেন মানুষের সামনে। প্রথম তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে আলুওয়ালিয়াকে আর জেলায় দেখা যায়নি। অনুগামীরা ধরে নিয়েছিলেন, দ্বিতীয় তালিকায় তাঁর নাম প্রকাশ হবে। সেইমতো তাঁরা ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় তালিকায়ও তাঁর নাম নেই। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপর ভরসা রেখেছে দল। দুই বর্ধমানেই সংগঠন অত্যন্ত দুর্বল বিজেপির। এখন তাঁরা চিন্তায়, এই অঞ্চল থেকে একটিও আসন পাবেন তো তাঁরা?
ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে 'কুকথা', দিলীপ ঘোষ ও অভিজিৎ গাঙ্গুলির পর এবার বেলাগাম অসীম সরকার
দিলীপ ঘোষ ও অভিজিৎ গাঙ্গুলির পর এবার অসীম সরকার। ফের মুখ্যমন্ত্রীকে কুকথা বিজেপি প্রার্থীর। পাড়ার এক ‘অন্ধ’ গায়কের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুলনা করলেন তিনি। কালনায় সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে অন্ধ রতন কানার সঙ্গে তুলনা করেন অসীম সরকার। উনি কটাক্ষ করে বলেছেন “মোদীজির উন্নয়ন এরা গ্রহণ করতে চায় না। যেগুলো নেয় সেগুলো নিজের নামে স্টিকার লাগিয়ে দেয়। নিজেদের নামে সেই সব প্রকল্প চালানো হয় এখানে। আমার একটা ছোট্ট গল্প মনে পড়ে গেল। পাগল বিজয় সরকারের একটা বিখ্যাত গান আছে - 'পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী এতদিন ভাবি নাই মনে'। শুনেছেন আপনারা গানটা। ওই গানটাই পাগল বিজয় সরকারের গ্রামের রতন কানা খুব ভালো গাইত। বিজয় সরকারের সেই গান থেকে তাঁর নাম তুলে দিয়ে রতন কানা নিজের নাম বসিয়ে দেয়। দিদির অবস্থাও তাই। আমার মোদিজী এত বড় মাপের তো। সারা বিশ্বের প্রিয়। উনি যত প্রকল্প পাঠান ওঁর নামটা বলতে মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা করে। তাই নিজের নামটা ঢুকিয়ে দেন। এই জন্যই বলছি ওই রতন কানাও যা, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীও তাই।”
বরানগরে তৃণমূলের প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়
রাজ্যের দুটি বিধানসভা আসনে মালদহের ভগবানগোলা ও বরানগরে হবে উপনির্বাচন। ভগবানগোলায় তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলি সম্প্রতি মারা গেছেন। আর বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় ইস্তফা দিয়ে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। বিজেপি ইতিমধ্যেই দুই আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। বরানগরে প্রার্থী সজল ঘোষ আর ভগবানগোলায় ভাস্কর সরকার। কিন্তু বরানগরে তৃণমূলের প্রার্থী কে? কেউ কেউ বলছেন প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ শান্তনু সেন হবেন বরানগরে তৃণমূলের প্রার্থী। আবার কেউ কেউ প্রাক্তন মুখ্যসচিব হরিকষ্ণ দ্বিবেদীর নামও বলছেন। কিন্তু পার্থ ভৌমিক ও সুজিত বসু বরানগর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপ নারায়ণ বসুর নাম প্রস্তাব করেছেন। শোনা যাচ্ছে লোকসভা ভোটে যাঁদের প্রার্থী করা যায়নি তাঁদের মধ্যে থেকেই একজনকে বরানগরে প্রার্থী করা হতে পারে। তাই অনেকেই বলছেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বরানগরের টিকিট পেতে পারেন। এখন তৃণমূলের অন্দরের খবর অনুযায়ী, সজলের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন ‘অভিমানী’ সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কাছে এবিষয়ে এখনও কোনও খবর নেই বলেই জানিয়েছেন অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, “আমার কাছে এখনও কোনও কনফার্মেশন নেই। দল তো নাম ঘোষণা করবে। ততক্ষণ অপেক্ষা করি।”
অগ্নিমিত্রাকে মেনে নিচ্ছেননা মেদিনীপুরের বিজেপি কর্মীরা
গতবার মেদিনীপুর থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে সংসদে গিয়েছিলেন বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু, পাল্টেছে সময়, উল্টেছে রাজ্যপাট, এখন দিলীপ বিজেপিতে এক সাধারণ কর্মীর সমান। মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র দিলীপকে এবার তাঁর পুরোনো আসন থেকে টিকিট না দিয়ে দুর্গাপুরে পাঠিয়েছে বিজেপি, আর আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়িকা অগ্নিমিত্রা পালকে পাঠানো হয়েছে পদ্মের টিকিটে মেদিনীপুর থেকে লড়তে। এর জেরেই শুরু হয়েছে হাজারো সমস্যা। অগ্নিমিত্রাকে মেনে নিতে পারছেননা বিজেপি কর্মীদের বড় একটা অংশ। কর্মীদের সংসুথ করতে অগ্নিমিত্রাকে বলে বেড়াতে হচ্ছে যে তিনি রাজনীতির আঙিনায় পা রেখেছে দিলীপ ঘোষের দৌলতে। শুভেন্দু অধিকারী যে মেদিনীপুরে প্রার্থী বাছাই করতে বড় কলকাঠি নেড়েছেন, তা বুঝতে পারছেন কর্মীরা। ভারতী ঘোষের নাম প্রাথমিকভাবে পেশ করা হলেও আচমকাই অগ্নিমিত্রাকে প্রার্থী করা হয়, যা নিয়ে এখন বিশ বাওঁ জলে গেরুয়া শিবির।