আচার্য্য ও প্যারামাউন্ট
আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, ইতিহাসবিদ, শিল্পপতি। মারকিউরাস নাইট্রেটের আবিষ্কারক, বেঙ্গল কেমিক্যালের প্রতিষ্ঠাতা। সুভাষচন্দ্র সিনেমায় যাকে আমরা যাঁর চরিত্রাভিনেতাকে দেখেছিলাম, “মুড়ি নারকেল খেতি পারো নি?”, বলে চপ – কাটলেট ছুঁড়ে ফেলে দিতে। আর তাঁর জন্মদিন।
কিন্তু আচার্য্য ও প্যারামাউন্টের মধ্যে কি সম্পর্ক? ঠিকই ধরেছেন, কলেজ স্ট্রিটের বিখ্যাত শরবতের দোকান প্যারামাউন্টের কথাই বলা হচ্ছে। কলকাতায় থাকেন, কিন্তু একবারও প্যারামাউন্টের শরবত খাননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
এই প্যারামাউন্টের সবচেয়ে বিখ্যাত ডাবের শরবত। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র বসু সহ তাবড় তাবড় মানুষ খেয়ে গেছেন এখানকার শরবত। ১০৫ বছর আগে এই দোকান প্রতিষ্ঠা করেন নীহার রঞ্জন মজুমদার।
ডাব শরবত তো এখানে সবাই খান, কিন্তু তার ইতিহাস কতজন জানেন? দোকানে ঢুকলেই দেখতে পাবেন আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের এক বিরাট প্রতিকৃতি।
ফ্ল্যাশব্যাক: স্বাধীনতা সংগ্রামের কাল। ফুটছে ছাত্রদের রক্ত, দেশ থেকে অত্যাচারী ব্রিটিশদের সংকল্পে তাঁরা নির্ভীক, অনড়। কিন্তু হাতে কারোরই তেমন টাকা পয়সা নেই। এদিকে এক একজন পড়াশোনা, অধ্যাবসায় তুখোড়।
প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ঠিক করেন যে এমন কিছু তৈরি করা দরকার যা একইসঙ্গে ছাত্রদের ক্ষুদা ও তৃষ্ণা মেটাবে, এবং তা হবে স্বল্প খরচে। তখন তিনি প্যারামাউন্টের প্রতিষ্ঠাতা নীহার রঞ্জন বাবুর সঙ্গে ভাগ করে নেন এই কিংবদন্তি ডাব শরবতের সিক্রেট রেসিপি, যা আজও গরমের দিনে তৃপ্তি দিয়ে যাচ্ছে মানুষকে।