অসংসদীয় মন্তব্য করেও সাসপেন্ড নন বিজেপি সাংসদ
গতকাল লোকসভায় দক্ষিণ দিল্লির বিজেপি সাংসদ রমেশ ভিদুরি নিজের বক্তব্য চলাকালীন কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেন উত্তরপ্রদেশের বহুজন সমাজ পার্টির সাংসদ দানিশ আলীকে। দানিশকে ‘মোল্লা সন্ত্রাসি’ বলে কটাক্ষ করে বিজেপি সাংসদ। এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছে বিরোধী দলগুলি। কিন্তু রাজনাথ সিং শুধু দুঃখপ্রকাশ করা ছাড়া কোনো পদক্ষেপই নেই বিজেপি বা সরকার বা সংসদের পক্ষ থেকে।
বৃহস্পতিবার বক্তব্য রাখার সময় হঠাৎ রমেশ নিশানা করেন দানিশ আলীকে এবং তাঁকে উগ্রবাদী এবং মোল্লা আতঙ্কবাদী বলে কটাক্ষ করেন। আলীর উদ্দেশ্য চিৎকার করে ‘ভারওয়া’ এবং ‘কাটোয়া’ শব্দও প্রয়োগ করেন ভিদুরি। তাঁকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার নিদানও দেন ভিদুরি।
অসংসদীয় মন্তব্যের জন্য বিজেপি সংসাদ রমেশ বিধুরীকে সতর্ক করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। স্পিকার তাঁকে জানিয়েছেন আগামী দিনে এই ধরনের আচরণ করলে সাংসদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কেন প্রথমবারেই সাসপেন্ড না করে সুযোগ দেওয়া হল তাকে? বিজেপির প্রতিনিধি বলে? ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠেছে এই নিয়ে।
এই মন্তব্যগুলি লোকসভার রেকর্ড থেকে মুছে ফেলা হলেও সারা দেশের সামনে, লাইভ টিভিতে এই বক্তব্য দেন বিজেপি সাংসদ। লোকসভার রেকর্ড থেকে এই কুৎসিত শব্দমালা মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বিতর্ক থামছে না দেশজুড়ে।
এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে বিরোধীরা। তারা সাংসদের সাসপেনশন বা গ্রেফতারি দাবি করেছে।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, “অত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয়। রাজনাথ সিং সম্পূর্ণ হৃদয় থেকে ক্ষমা চাননি। তাঁর এই ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এটা সংসদের অপমান।”
এরপরই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বিজেপি সাংসদের ওই মন্তব্য়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সাংসদের ওই মন্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত।”
তৃণমূল সংসদ অপরূপা পোদ্দার লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে আবেদন করেছেন, বিজেপি সংসদের মন্তব্যটি যেন প্রিভিলেজ কমিটিতে পাঠানো হয় বিবেচনার জন্য।
এদিকে, বিজেপি সাংসদ যখন ওই বিতর্কিত মন্তব্য করছিলেন, সেই সময় মুচকি হাসি হাসতে দেখা যায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে। এ প্রসঙ্গে তিনি সাফাই দিয়ে বলেন, “আমায় বিনা কারণে এই বিতর্কে টানা হচ্ছে। যখন দুই সাংসদ একে অপরের প্রতি শব্দের মারপ্য়াঁচ প্রয়োগ করছিলেন, তার সাক্ষী আমি ছিলাম অবশ্যই, কিন্তু হই-হট্টগোলের কারণে কী বলা হচ্ছিল, তা আমি স্পষ্টভাবে শুনতে পাইনি।”