রেডিওর আসল উদ্ভাবক কে?
গাছের দিকে গভীর বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকার সময় বলেছিলেন, ”আমি শুধু দেখছি না, আমি ভাবছিও। আমি আমার কবিবন্ধুর কাছ থেকে দৃষ্টি ধার করেছি। স্তব্ধ যবনিকার অন্তরালে যা আছে, তা জানতে চাই।”
সেই কবিবন্ধুর নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর সত্য জানতে উন্মুখ মানুষটির নাম জগদীশচন্দ্র বসু। একথা সবার অজানা নয়, ১৯০৯ সালে ইটালির বিজ্ঞানী গুলিয়েলমো মার্কনির পাওয়া নোবেল পুরস্কারটি আসলে প্রাপ্য ছিল এই বঙ্গসন্তানেরই। কিন্তু কেন অধরা থেকে গেল নোবেল? ১৮৯৫ সালে জগদীশচন্দ্র সফল হয়েছিলেন মিলিমিটার ওয়েভলেংথ ফ্রিকোয়েন্সি প্রযুক্তির ব্যবহারে। নিজের সৃষ্ট যন্ত্রটির তিনি নাম দিয়েছিলেন মার্কারি কোহেরার।
মনে করা হয়, মার্কনির লুইগি সোলারি কোনও ভাবে জগদীশচন্দ্র উদ্ভাবিত যন্ত্রটির কথা জানতে পেরে নিজেই সেটি তৈরি করে জগদীশচন্দ্র ব্যবহৃত ইউ আকারের কাঁচের নলটির জায়গায় সোজা সরলরেখার আকারের একচি নল ব্যবহার করেন। তাহলে স্বাভাবিক ভাবে আরেকটি প্রশ্ন উঠে আসে। কেন নিজের তৈরি যন্ত্রের পেটেন্ট করে রাখেননি জগদীশচন্দ্র?
আসলে তিনি বিশ্বাস করতেন, পেটেন্ট নেওয়ার অর্থই জ্ঞানকে সীমাবদ্ধ করে ফেলা।
১৯১৭ সালে যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রেডিওর আসল উদ্ভাবক কে, তিনি স্পষ্ট কথায় জানিয়ে দেন, আবিষ্কারক নয়, আবিষ্কারটাই গুরুত্বপূর্ণ। এমনই দর্শন ছিল সত্যসন্ধানী মানুষটির।