একই তারিখে জন্ম-মৃত্যু: মুর্শিদাবাদের সন্তান পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি
যদি শোনেন, পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি একজন বাঙালি, কেমন লাগবে? একদমই আষাঢ়ে গল্প নয়, একেবারে সত্যি। পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার আলী মির্জার জন্ম ১৮৯৯ সালের ১৩ই নভেম্বর, বাংলার মুর্শিদাবাদে। বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলেন মির্জা।
১৯৪৬ সালে তিনি ব্রিটিশ রাজের রক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব হিসেবে যোগ দেন। দেশভাগের পর পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান মির্জাকে প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে নিযুক্ত করেন। ৭ বছর এই পদে থাকার পর ভাষা আন্দোলন-মুখর পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর করা হয় তাঁকে, যাতে তিনি নিজের অঞ্চলে আন্দোলনকে স্তিমিত করতে পারেন। খুব বেশিদিন এই পদে থাকতে হয়নি তাঁকে, যার পরেই তাঁকে রাজ্য ও সীমান্ত অঞ্চল এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের চতুর্থ গভর্নর জেনারেল হন মির্জা। ১৯৫৬ সালের ২৩শে মার্চ পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মির্জা। তাঁর শাসনকাল খুব একটা সুখকর হয়নি কারণ ১৯৫৮ সালের ২৭শে অক্টোবর তিনি সংবিধান বাতিল করে দেন ও দেশে মার্শাল আইন জারি করেন, এবং তখনই সেনা অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে দেশের ক্ষমতা দখল করেন সেনা প্রধান জেনারেল আয়ুব খান, যার ফলে ইস্কান্দর আলি মির্জা লন্ডনে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
পাকিস্তানে আর ফিরতে পারেননি ইস্কান্দার আলী মির্জা। ফিরতে পারেনি তাঁর মরদেহও। তাঁর আত্মীয়দেরও পাকিস্তানের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি তার মৃত্যুর সময়। পাকিস্তান থেকে পালিয়ে লন্ডনে পাকিস্তানি খাবারের একটি ছোট দোকান চালাতেন মির্জা। ১৯৬৯ সালে ১৩ নভেম্বর, তাঁর ৭০তম জন্মদিনের দিন লন্ডনেই তাঁর প্রয়াণ ঘটে।
এক শেষ তথ্য: ইস্কান্দার আলী মির্জা ছিলেন নবাব মীর জাফরের বংশধর।