আজ সংসদে ওয়াকফ বিল
এপ্রিল 2, 2025 2 min read

বিরোধীদের চরম আপত্তি থাকা সত্ত্বেও আজ বেলা ১২টায় লোকসভায় পেশ হওয়ার কথা সংশোধিত ওয়াকফ বিল, ২০২৫। রাজ্যসভায় এটি পেশ হতে পারে বৃহস্পতিবার।
লোকসভায় দীর্ঘ সময় ধরে (৮ ঘন্টা বরাদ্দ) আলোচনার পরে বিলটি ভোটাভুটির মাধ্যমে পাশ করাতে চাইছে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার।আপাতদৃষ্টিতে লোকসভা এবং রাজ্যসভার অঙ্ক অনুযায়ী বিলটি পাশ করাতে বিশেষ কসরত করতে হবে না এনডিএ-কে। তবে, এই বিল পাশ করানোর ক্ষেত্রে শরিক দলগুলি, বিশেষত নীতীশের জেডিইউ এবং চন্দ্রবাবুর টিডিপির উপর অনেকটাই নির্ভর করতে হবে তাদের।
সত্যি কথা বলতে এই ওয়াকফ বিল নিয়ে নীতীশ এবং চন্দ্রবাবু কী অবস্থান নেন, তা নিয়ে শুরুর দিকে ধন্দে ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। মাসখানেক বাদেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তবে, শেষমেশ জেডিইউ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই বিলকে সমর্থন করছে। মঙ্গলবার টিডিপি মুখপাত্র প্রেমকুমার জৈন বলেন, “আমাদের দল (বিলটি) সমর্থন করবে।” একনাথ শিন্দের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা তিন লাইনের হুইপ (নির্দেশিকা) জারি করে লোকসভায় দলীয় সাংসদদের বিলটির সমর্থনে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। একইভাবে বিলের পক্ষে থাকার জন্য লোকসভায় উপস্থিত থাকার হুইপ জারি করেছে চিরাগ পাসওয়ানের এলজেপি।
অন্যদিকে, এই বিলের বিরুদ্ধে এককাট্টা বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ও। উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট,২০২৪ বিরোধীদের প্রবল আপত্তি ও হট্টগোলের মধ্যেই লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। বিলটি ‘অসাংবিধানিক এবং মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারী’ বলে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা একযোগে তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। দীর্ঘ বিতর্কের শেষে ঐকমত্যের লক্ষ্যে বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। জগদম্বিকা পালের নেতৃত্বে ৩১ সদস্যের জেপিসি বিরোধীদের আপত্তি উপেক্ষা করেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে গত ৩০ ডিসেম্বর ১৪টি সংশোধনী-সহ বিলটি সংসদে পেশ করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছিল । সরকার পক্ষের তরফে ২৩ এবং বিরোধীদের তরফে ৪৪টি সংশোধনী প্রস্তাব কমিটিতে জমা পড়েছিল। সরকার পক্ষের সাংসদদের আনা ১৪টি সংশোধনী গৃহীত হলেও বিরোধীদের সব ক’টি সংশোধনী প্রস্তাবই জেপিসিতে খারিজ হয়ে যায়। গতকালও বি এ সি বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করে বিরোধী দলগুলি।
অঙ্ক কি বলছে:
লোকসভা: লোকসভায় বিলটি পাশ করাতে সমর্থন প্রয়োজন ২৭২ জন সাংসদের । বিজেপির সাংসদ সংখ্যা ২৪০, জেডিইউ-এর ১২ আর টিডিপির ১৬, এলজেপি’র ৫ জন এবং শিন্ডে সেনার ৭ জন সাংসদ রয়েছেন, মোট ২৮০ । অতএব, শরিকদের সমর্থনে অনায়াসেই বিলটি লোকসভায় পাশ করাতে পারবে এনডিএ শিবির।
রাজ্যসভা: রাজ্যসভায় এনডিএ-র সাংসদ সংখ্যা ১২৫। ৬’টি আসন শূন্য রয়েছে। অর্থাৎ, ১১৮ জন সাংসদের সমর্থন পেলেই উচ্চ কক্ষে বিলটি পাশ করাতে পারবে বিজেপি। রাজ্যসভায় বিজেপির ৯৮ জন, জেডিইউ-এর ৪ জন, অজিত পওয়ারের এনসিপির ৩ জন এবং টিডিপির ২’জন সাংসদ রয়েছেন। পাশাপাশি বিজেপির আশা, অসম গণ পরিষদ এবং তামিল মানিলা কংগ্রেসের এক জন সাংসদের সমর্থন তারা পাবে। এছাড়া মনোনীত ছ’জন সদস্যও বিলের পক্ষে ভোট দেবেন বলে আশা করছে পদ্ম শিবির।



