দশমীতে সিঁদুর খেলা,কোলাকুলি হয় না, হয় কাদা ছোড়াছুড়ি
সিঁদুর খেলা বা কোলাকুলি দশমীর এই চেনা ছবি দেখা যায় না বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকের উত্তরবাড় গ্রামে। সেখানে পুজোর শেষ দিনে গ্রামবাসীরা হাতে তুলে নেন কাদামাটি। উত্তরবাড় গ্রামের এক প্রান্তে রয়েছে ঝগড়াইভঞ্জনী দেবীর মন্দির। মা দুর্গা এই রূপেই এখানে পূজিতা। আশপাশের বহু গ্রাম থেকে এই মন্দিরের সামনে জড়ো হন মানুষ। কাদার খেলায় মেতে ওঠেন সকলে।সাতটি পুকুলের জল দিয়ে এক জায়গা ভরাট করা হয়। এরপর গ্রামের মানুষ নেমে পরে ওই কাদা জলে। একে ওপরের দিকে কাদা জল ছুড়ে দেয়।
প্রায় ৩০০ বছর ধরে চলে আসছে এই রীতি। মল্লরাজ রঘুনাথ সিংহ ঝগড়াইভঞ্জনী দুর্গা মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সাড়ে ৩০০ বছর আগে এই এলাকায় মল্ল রাজাদের শাসন ছিল। কথিত আছে, সেই সময় নাকি নিকটবর্তী বর্ধমানের রাজা, কোতুলপুরের রাজা এবং চন্দ্রকোনার রাজাদের সঙ্গে মল্ল রাজারা প্রায়ই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তেন।রাজা মানত করেছিলেন, যুদ্ধে জয় পেলে উত্তরবাড় গ্রামে তিনি ঝগড়াইভঞ্জনী দুর্গার মন্দির প্রতিষ্ঠা করবেন। মন্দির স্থাপিত হয় যথাসময়ে। দেবীর সংহার মূর্তি গড়ে মহা সমারোহে শুরু হয় দুর্গাপুজো।মন্দির প্রতিষ্ঠার প্রথম বছর দশমীর দিন মল্লরাজ সেনাদের নিয়ে কাদাখেলায় মেতে ওঠেন। তখন থেকেই এই কাদাখেলার এই রীতি চলে আসছে।
Image – Anandabazar