ফ্ল্যাট বুকিংয়ের সমস্যা মেটাতে বিধির সংশোধনী আনছে রাজ্য
সারা জীবনের সঞ্চয় কিংবা পাহাড়প্রমাণ লোন নিয়ে মধ্যবিত্ত মানুষেরা মধ্যবিত্ত গড়ে তোলেন তাঁদের স্বপ্নের বাড়ি। সেই বাড়ি যদি ফ্ল্যাট হয় তাহলে তা কেনার সময়ে মূলত ২টি প্রশ্ন ঘোরে তাঁদের মধ্যে। এক, ফ্ল্যাট বুকিংয়ের সময় কত টাকা দিতে হবে আর দুই, যদি ক্যানসেল করতে হয়, তাহলেই বা কত টাকা মাশুল গুনতে হবে? কেননা কিছু অসাধু প্রোমোটারের জালে আটকে আচমকা ভেঙে পড়ে সেই স্বপ্নের ভিত। কখনও ফ্ল্যাট বুকিংয়ের সময়ই তাঁদের থেকে বড়সড় একটা অঙ্ক চাওয়া হয়। আবার যদি পরিস্থিতির গেরোয় ফ্ল্যাটের বুকিং বাতিল করতে হয়, তার জন্যও গুনতে হয় মোটা টাকা ‘জরিমানা’। বুকিং অ্যামাউন্ট তো পাওয়া যায়ই না, অনেক ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত দাবি করে বসে প্রোমোটারদের একাংশ। সাধারণ মানুষের এই ‘দুর্ভোগ’ই এবার RERA বিধি সংশোধন করে বন্ধ করার পথে রাজ্য সরকার। বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, ফ্ল্যাটের বুকিং এবং ক্যানসেলেশন মোট দামের ১০ শতাংশেই বেঁধে ফেলতে চলেছে নবান্ন। সেই কারণেই সংশোধনী আসছে RERA’র বিধিতে।
সংশোধিত Rule-এ পরিষ্কার বলা থাকবে যে, বুকিং অ্যামাউন্ট যা সর্বোচ্চ হবে মোট দামের ১০ শতাংশ, তার থেকে এক টাকারও বেশি ক্রেতার ‘ফরফিট’ হবে না, বা প্রোমোটার কাটতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্রেতাকে ফ্ল্যাট দিতে না পারলে State Bank of India’র বাজার চলতি Benchmark Prime Lending Rate অর্থাৎ যে সুদের হারের ওপর ভিত্তি করে ঋণ দেয় ব্যাঙ্ক তার সঙ্গে ২ শতাংশ যোগ করে যে সুদের হার দাঁড়ায়, ফ্ল্যাটের দামের ওপর সেই হারে ক্রেতাকে পেনাল্টি দিতে হয় প্রোমোটারকে। হবে। ক্রেতা বকেয়া অর্থ মেটাতে না পারলে তাঁকেও একই নিয়ম মানতে হবে। এই নিয়মও আরও ভালোভাবে স্পষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে সংশোধিত আইনে। পর পর কতগুলি মাসের কিস্তি বকেয়া পড়লে প্রোমোটার বকেয়া মেটানোর নোটিস ধরাবেন ক্রেতাকে। তারপরও যদি তিন মাস পর্যন্ত ক্রেতা টাকা না দেন, ফ্ল্যাটের চুক্তি বাতিল করতে পারবেন প্রোমোটার। তবে সেই ক্ষেত্রেও ১০ শতাংশ বুকিং অ্যামাউন্ট ছাড়া ফ্ল্যাট কেনার জন্য ক্রেতা যত টাকা দিয়েছেন, তার পুরোটা ফেরত দিয়ে তবেই চুক্তি খারিজ করতে পারবেন প্রোমোটার। সেটাও ৪৫ দিনের মধ্যে। ইতিমধ্যে সংশোধিত এই রুলের খসড়া আইন জমা দিয়েছে আবাসন দপ্তর। সম্প্রতি এই সংশোধনী সম্পর্কে বেশ কিছু ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে আইন দপ্তরের তরফে। যার উত্তরও ইতিমধ্যে আবাসন দপ্তর পাঠিয়ে দিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। ফলে শীঘ্রই বিধানসভায় এই সংক্রান্ত বিল আসতে চলেছে বলেই সূত্রের খবর।