জনগণের গর্জন, বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
আজ জনগর্জন সভার মাধ্যমে তৃণমূলের তরফে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হলো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনের সভা থেকে কর্মীদের বার্তা দেন। জনগর্জন সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য :
অনেকে অনেক রকম কথা বলছিল। কেউ বলছিল তৃণমূল দল একে একে ছেড়ে চলে যাচ্ছে, দলটাই থাকবে না। কেউ বলছিল সাফ হয়ে যাবে, কেউ বলছিল ধুয়ে মুছে যাবে। বিগত ১৫-২০ দিনে বহিরাগত নেতারা অনেক বক্তৃতা দিয়েছেন বাংলার মাটি থেকে। এদের কাছে টাকা আছ, ইডি আছে, সিবিআই আছে। আর তৃণমূলের কাছে মানুষ আছে। একটা লড়াই হোক রাষ্ট্রশক্তির কাছে মানুষ জেতে কি না দেখা হোক।
আজকের ব্রিগেড সমাবেশ তৃণমূলের সমাবেশ নয়, ৫৯ লক্ষ শ্রমিক যাদের টাকা আটকে রাখা হয়েছিল তাদের সমাবেশ, গরিব খেটে খাওয়া মানুষের ব্রিগেড। ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার প্রকৃত প্রাপক যাদের মাথার ওপর ছাদ প্রয়োজন। আজ তাঁদের ব্রিগেড। বাংলার আপামর জনসাধারণের ব্রিগেড, তফশিলি জাতি-উপজাতির ব্রিগেড
তৃণমূল কথা দিয়ে কথা রাখে। নবজোয়ারের সময় বলেছিলাম, আপনি ১০০ দিনের টাকাকে সামনে রেখে ভোট দিন, টাকা আপনারা পাবেন। মানুষ ভোট দিয়েছেন। ৬ মাসের মধ্যে ১০০ দিনের টাকার ব্যবস্থা আমরা করেছি। আজ যে কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করতে চলেছি, তার নাম জনগণের গর্জন, বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন।
বাংলাকে গালি দেওয়ায় কাউকে বিরোধী দলনেতা করা হয়েছে, কাউকে বিধায়ক থেকে সাংসদ পদে উন্নীত করা হয়েছে। একজন অভিনেতা বিভিন্নভাবে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন তাঁর কাজের মধ্যে, তাঁকে আসানসোলের প্রার্থী করা হয়েছিল বিজেপির তরফে। পরে তিনি নিজেই বলেছেন, প্রার্থী হব না। এটাই বাংলার ক্ষমতা, বাংলার শক্তি।
আগে চোর চুরি করে জেলে যেত, এখন চুরি করে বিজেপিতে যায়। এটাই মোদীর গ্যারান্টি। ১৫ লক্ষ টাকা দেননি কাউকে, মোদীর জিরো গ্যারান্টি। আর একজন টালির চাল থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছিলেন। ১২ বছর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও আজও সেই টালির চালে থেকে, হাওয়াই চপ্পল পরে ১০ কোটি মানুষের উন্নয়নের ধারা পরিচালনা করছেন। আপনি কার গ্যারান্টিতে বিশ্বাস করেন?
যারা আমাদের কথা বুঝতে পারে না, তারা আমাদের মনে ভাষা কী করে বুঝবে। যে বাংলা বলতে পারেন না, লিখতে পারেন না, শুনতে পারেন না, যে বাংলাকে বাংলাদেশি বলেন, তার থেকে গ্যারান্টি নেবেন? মোদী কতবার বাংলায় এসেছেন? আসেননি কারণ বাংলা আপনার কাছে মাথা নত করেননি।
বিবেকানন্দ না থাকলে, বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে গিয়ে বাংলার মাথা উঁচু করার মতো সন্ন্যাসীকে ভারত পেত না। নেতাজি না থাকলে আজাদ হিন্দ ফৌজ তৈরি করে ব্রিটিশদের নাড়িয়ে দিতেন না কেউ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর না থাকলে নিজের নামটাও বাংলায় লিখতে পারতেন না। রাম মোহন রায় না থাকলে সতীদাহ প্রথা কোনও দিন বন্ধ হত না। মমতা না থাকলে আজও বাংলার কোটি কোটি মানুষকে, বিশেষত জঙ্গলমহলের অত্যাচারিত মানুষকে সিপিএম আর মাওবাদীদের বন্দুকের নলের কাছে মাথা নত করে বাঁচতে হত।
আমি বিচারপতি নিয়ে কিচ্ছু বলব না। শুধু বলব আগে আমাদের দেশে কেউ চুরি করলে বা খুন করে বিচারপতিরা তাঁদের জেলে পাঠাতেন। আজ মোদীজির ভারতে চোরেরা, খুনিরা বিচারপতিদের উত্তরীয় পরিয়ে দলে স্বাগত জানাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জবাব দিন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলায় এসে বলে গিয়েছেন বাংলার আবাসের জন্য ৪২ হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। গত ৩ বছরে মোদী সরকার যদি প্রমাণ করতে পারে আবাসের একটা টাকা দিয়েছে, তাহলে আমি রাজনীতি থেকে অবসর নেব, আপনারা যা শাস্তি দেবেন, তা মাথা পেতে নেব। শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে বিজেপিকে।