বিতর্কিত অডিও ক্লিপ অনিকেতের, স্বীকার জুনিয়র ডাক্তারের
কুণাল ঘোষের প্রকাশিত অডিয়ো ক্লিপকে সত্য বলে মেনে নিলেন জুনিয়ার চিকিৎসকরা ৷ এই অডিও ক্লিপে যাঁর কণ্ঠস্বর রয়েছে, তিনি হলেন আন্দোলনের অন্যতম মুখ অনিকেত মাহাতো । নিজের মুখে সে কথা স্বীকার করে নিলেন অনিকেত। এমনকী তিনি এও স্বীকার করেন, প্রকাশিত কথোপকথন আসলে তাঁদের আলোচনার একটি অংশ। তবে, এই ধরনের অডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে এনেও আন্দোলন ভাঙা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সম্পূর্ণ বিষয়টিকে তাঁরা সরকারের চক্রান্ত হিসাবে দেখাতে চাইছেন।
এই অডিও প্রসঙ্গে ডাক্তার অনিকেত মাহাতো বলেন, “জল্পনার কোনও জায়গাই নেই। এটা ঠিক ওটা আমাদের আলোচনার একটা অডিও। আর ওটা আমারই কণ্ঠস্বর। কিন্তু উনি আমাদের মধ্য়ে মতানৈক্যের কথা বলতে চাইছেন৷ আর সেটা ঠিক নয় ৷ গণতান্ত্রিক পরিসরে যেভাবে আলোচনা হয়, সেভাবেই আমরা আলোচনা করি। সরকার চক্রান্ত করে আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করছে। সেই জায়গায় আমাদের সাবধানতা নিতে হবে। শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলন ভাঙার জন্যই সরকারের তরফে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে। তবে আমরা খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছি না৷”
এই বিতর্কের সূত্রপাত রবিবার ৷ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে জুনিয়র ডাক্তারদের কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন কুণাল ঘোষ৷ তাঁর দাবি, জুনিয়র ডাক্তারদের মনে জটিল মানসিকতা ছিল বলেই মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে৷ তারপর সেই পোস্টকে ঘিরেই শুরু হয় জল্পনা৷
কুণাল ঘোষের বক্তব্য অনুযায়ী, জুনিয়র ফ্রন্টের একাংশ আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে নারাজ। প্রকাশিত অডিয়ো ক্লিপ সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। অবশ্য তৃণমূল নেতার এই দাবি সম্পূর্ণ খারিজ করে দিতে চান জুনিয়র ডাক্তাররা৷ তাঁদের কথায়, “মতানৈক্য থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যেকোনও বৈঠক করার কারণ মতানৈক্যকে বাদ দিয়ে সহমতে আসা। সেই সহমতে এসেই আমরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম সমস্যার সমাধান করতে।” এই অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে এনে আন্দোলনে ভাঙনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের ৷
উল্লেখ্য, ‘জেনারেল বডি মিটিং’ এই কথাটি জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের অন্যতম চর্চিত একটি শব্দ। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এই জেনারেল বডি মিটিং করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো এই প্রসঙ্গে বলেন, “রাজ্যের 26টি মেডিক্যাল কলেজ আগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে। তারপর সেই আলোচনা নিয়ে জুনিয়র ফ্রন্ট একটি বৈঠক করে। যাকে বলা হয় জেনারেল বডি মিটিং।” কিন্তু এই গুপ্ত আলোচনার অর্থ কী? কেনো লাইভ স্ট্রিমিং করা হয় না এইসব আলোচনা? এই নিয়ে কিছু মন্তব্য করেননি অনিকেত।
অন্যদিকে আর এক ভাইরাল অডিওর স্বতঃপ্রণোদিত জিডির তথ্য তুলে ধরে বিধাননগর পুলিশ ও রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক যোগসাজসের অভিযোগ করেছেন সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ। DYFI নেতা কলতান দাশগুপ্তের গ্রেফতারির ঘটনায় বিধাননগর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক সম্মেলন করে শতরূপ বলেন, “কুণাল ঘোষের প্রকাশ করা অডিওর পর বিধাননগর কমিশনারেট থেকে মামলা রুজু হয়। তার ভিত্তিতে থানা সুয়োমোটো করে । এর আগেও কুণাল ঘোষ অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু পুলিশ কোনও তদন্ত করেনি। কিন্তু এ বিষয় পুলিশ কেন অ্যাকশন নিল?” সিপিএমের এখন শাঁখের করাত অবস্থা, কলতানের দুষ্কৃতী পরিকল্পনা কে স্বীকার করতেও পারছে না, আবার কমরেড কলতানের পাশেও দাঁড়াতে হচ্ছে।