সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়, সতর্ক করলো সুপ্রিম কোর্ট
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংবাদমাধ্যমের ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপের চেষ্টায় রয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অথবা প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনের উপরে শুনানির আগেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া যাবে না, এই নিয়ে আদালতগুলোকে সতর্ক করল সুপ্রিম কোর্ট।
সম্প্রতি বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চ এব্যাপারে কড়া অবস্থান নিয়ে বলেছেন, অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ প্রয়োগ করে যদি কোনও প্রতিবেদন সরিয়ে নেওয়া হয়, সেটা শুধু লেখকের কণ্ঠই রোধ করে না, জনতার জানার পরিধির অধিকারকেও খর্ব করে।
সম্প্রতি জি এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদন সরিয়ে ফেলতে হবে বলে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি হয়েছিল নিম্ন আদালতে। সেই স্থগিতাদেশ খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত। তারা জানিয়েছে, প্রাথমিক মামলা, সুবিধার ভারসাম্য এবং অপূরণীয় ক্ষতির এই তিনটি নিক্তি যান্ত্রিক ভাবে প্রযোজ্য হতে পারে না।
বেঞ্চের বক্তব্য, ‘‘সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার ক্ষেত্রে সম্মান ও গোপনীয়তার অধিকারের সঙ্গে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথাও উপযুক্ত ভারসাম্যের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। সংবাদমাধ্যমের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ণ না হয়, সেটা দেখতে হবে। প্রতিবেদন সরাসরি কুৎসামূলক বা সম্ভাব্য মিথ্যাচার বলে মনে না হলে শুনানির আগে স্থগিতাদেশ দেওয়া উচিত নয়।’’
একইসঙ্গে এইসব ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল আদালত এবং হাই কোর্টগুলিকেও সক্রিয় হতে বলেছে বেঞ্চ। এখনকার দিনে এসএলএপিপি (স্ট্র্যাটেজিক লিটিগেশন এগেনস্ট পাবলিক পার্টিসিপেশন) ঠুকে দেওয়া একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে, এই নিয়েও সতর্ক করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিপুল অর্থবলে বলীয়ান সংস্থারা প্রায়ই তাদের জনস্বার্থবিরোধী কাজকর্ম সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করতে চায় না আর সেই উদ্দেশ্যে তারা আইনি প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করছে।