বাংলার মহিলা সাংসদকে ‘বেশ্যা’ বলে আক্রমণ বিজেপির, ইঙ্গিত কি মহুয়া মৈত্রকে?
বাংলার মহিলা সাংসদকে ‘বেশ্যা’ বলে আক্রমণ বিজেপির, ইঙ্গিত কি মহুয়া মৈত্রকে?
রাজনীতিতে পারস্পরিক সম্মান তলানিতে গিয়ে ঠেকছে দিন-দিন। কিন্তু এবার সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেলেন ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। বাংলার মহিলা সাংসদকে ‘বৈশালী কি নগরবধূ’ হিসেবে সম্বোধন করেছেন বিজেপির এই সাংসদ। হিন্দিতে এই শব্দবন্ধনীর অর্থ ‘বেশ্যা’ বা ‘প্রস্টিটিউট’।
এর প্রতিবাদে দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন স্বাতী মালিওয়াল টুইট করে বলেন, “রাজনীতিতে মতভেদ যতই বড় হোক না কেন, ভাষার স্তর যেন নীচে না পড়ে। এই সদন ইন্দিরা-বাজপেয়ীজির তর্ক-বিতর্ক দেখেছে, কিন্তু মর্যাদার উলঙ্ঘন হতে দেখেনি। “নগরবধূ”-র সঙ্গে এক মহিলা সাংসদের তুলনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। সারা দেশের কাছে নিশিকান্ত দুবের অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া প্রয়োজন!”
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে দেওঘর বিমানবন্দরে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে, মনোজ তিওয়ারি ও তাদের আরও কয়েকজন সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ম ভাঙেন ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করেন। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র সেই বিষয়ে টুইট করে বলেন,”এতদিন চার্টার্ড বিমান সরকার ফেলার জন্য বিজেপির অস্ত্র ছিল, কিন্তু এবার কি সেই কাজে এটিসির ঘরে ঢোকাও যুক্ত হলো?”
এরপর নিশিকান্তের এমবিএ, পিএইচডি ডিগ্রিও জালি, তথ্যপ্রমাণ সহ দাবি করেন মহুয়া। ২০০৯ ও ২০১৪-র ইলেকশন এফিডেভিটে নিশিকান্ত দাবি করেন যে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘পার্ট টাইম’ এমবিএ করেছেন ও রাজস্থানের প্রতাপ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন, কিন্তু ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী বৈধ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ছাড়া কোনোভাবেই পিএইচডি করা যায়না।
বাংলার সাংসদ বলতে তিনি কাকে বোঝাচ্ছেন তা স্পষ্ট করেননি সাংসদ। কিন্তু গত কয়েকদিনের এই পরিস্থিতিতে তিনি তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
একজন মহিলার এই দুঃসাহস সহ্য না করতে পেরে নিজের পৌরুষ বোঝাতেই কি শালীনতা জলাঞ্জলি দিলেন বিজেপি সাংসদ?এভাবে কি মাতৃ-পূজারী ভারতবাসী তাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরুষের মর্যাদা দেবেন বলে তিনি মনে করছেন? কিন্তু তিনি হয়তো ভুলে যান, তাঁর মতো মানুষদের জায়গা সংসদের ভেতরে নয়, তার একেবারে বাইরে, জেলের মধ্যে।