দেশ বিভাগে ফিরে যান

‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে আপত্তি মোহন ভাগবতের

সেপ্টেম্বর 19, 2024 | 2 min read

উপমহাদেশের রাজনীতিতে রামমন্দির আন্দোলনকে হাতিয়ার করেই জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে উত্থান ঘটে বিজেপির। সেই আন্দোলনেরই স্লোগান ছিল ‘জয় শ্রীরাম’। কিন্তু ধীরে ধীরে তা বিজেপির সংস্কৃতির অন্দরে ঢুকে পড়ে তা কার্যত দলীয় স্লোগান হয়ে যায়। মোদি জমানায় সেই স্লোগান শুধু আর বিজেপির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। তা কার্যত হিন্দুত্ববাদীদের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। যত্রতত্র জোর গলায়, গায়ের জোরে সেই স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। পিটিয়ে মানুষ মারার সময়েও উঠছে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি আবার বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের অপদস্থ করার সময়েও উঠছে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। সরকারি অনুষ্ঠানস্থলেও বাদ যাচ্ছে না, সেই স্লোগান।

অবশেষে এই স্লোগানের ব্যবহার নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন বিজেপির আঁতুরঘর হিসাবে পরিচিতি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘর শীর্ষ নেতৃত্ব মোহন ভাগবত গতকাল অর্থাৎ বুধবার দিল্লিতে দামোদর সাতওয়ালেকরের লেখা চার বেদের হিন্দি ভাষ্য প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাগবত সমাপ্তি ভাষণ দিতে উঠতেই দর্শকাসন থেকে ‘জয় শ্রীরাম, ‘বন্দে মাতরম’ ধ্বনি দেওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত দর্শক থেকে আমন্ত্রিতদের অনেকেই সেই স্লোগান পছন্দ ছিল না। কেননা সেই অনুষ্ঠানের সঙ্গে বিজেপি বা রাজনীতির কোনও সম্পর্ক ছিল না। সেতা দেখে শুনে বুঝেই ভাগবত তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই জানিয়ে দেন, সবকিছুরই একটা জায়গা রয়েছে।

স্লোগানের ও জায়গা আছে, এটা সেই জায়গা নয়। সর্বত্র জয় শ্রীরাম, বন্দে মাতরম স্লোগান দেওয়া যায় না।’ ভাগবত শুধু এখানেই থেমে যাননি। যেভাবে বিজেপির নেতা থেকে শুরু করে নীচুতলার কর্মীরাও নিজেদের হিন্দু ধর্মের মালিক হিসাবে মনে করেন, আচরণ করেন, বক্তব্য রাখেন এবং যখনতখন তা নিয়ে খুন খারাপি থেকে ভাঙচুর, মারধরের যে সব কাণ্ড ঘটান তা নিয়েও ভাগবত কড়া বার্তা দিয়েছেন ঠারেঠোরে। জানিয়ে দিয়েছেন, ‘সনাতন ধর্মের উত্থানের সময় এসেছে। এ বিষয়ে বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গিও বদলে যাচ্ছে। আমরা এটাও জানি যে এই সময়ে, বেদের এই ভাষ্যগুলি একটি ইঙ্গিত দেয় যে এই বেদগুলি আমাদের এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যম। কিন্তু বেদ নিয়ে কথা বলা আমার অধিকার নয়, আপনাদের উৎসাহ দিতে এসেছি।বস্তুত ভাগবতের বক্তব্যকে এখন বিজেপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের জন্য কড়া সতর্কবার্তা হিসাবেই দেখা হচ্ছে।

অনেকেই মনে করছেন যেভাবে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানকে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি, বিভেদ, খুনখারাপির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে তা যে গেরুয়া রাজনীতির পক্ষে যাচ্ছে না সেটা আগেই টের পেয়েছিলেন ভাগবত। কিন্তু তিনি অপেক্ষা করছিলেন যদি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের যথাযথ বার্তা দেন তার জন্য। কিন্তু তা না দিতেই, গতকাল তিনি নিজে কড়া বার্তা দিয়ে দিয়েছেন। যদিও সেই বার্তায় যে বিশেষ কিছু কাজ হবে এমনটা অনেকেই মনে করছেন না। কেননা গেরুয়া শিবিরের মাঝারি তলা থেকে নীচুতলার নেতাকর্মীদের রাশ এখন আর পদ্মশিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বের হাতে নেই। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ‘আব কে বার ৪০০ পার’ স্লোগান তোলা বিজেপিকে থেমে যেতে হয়েছে ২৪০’র ঘরেই। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতাও তাঁদের হারাতে হয়েছে লোকসভার অন্দরে। আগামী দিনে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের যত্রতত্র ব্যবহারে লাগাম না টানলে যে দলের হাল আরও খারাপ হবে সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছেন ভাগবত।

FacebookWhatsAppEmailShare

আরো দেখুন

‘এক দেশ এক ভোট’ এর বিরুদ্ধে ইন্ডিয়া জোট
FacebookWhatsAppEmailShare
এক দশক পর জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বাচন,প্রথম দফায় ২৪ আসনে চলছে ভোটগ্রহণ
FacebookWhatsAppEmailShare
আবারও বঙ্গে পুজো উদ্বোধনে অমিত শাহ
FacebookWhatsAppEmailShare