কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার জন্য দায়ী রেল বোর্ড
মালগাড়ির চালকের ভুলে নয়, ট্রেন পরিচালনার পদ্ধতিগত ত্রুটিতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। এই দুর্ঘটনার জন্য রেল বোর্ডকেই দুষেছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। এই রিপোর্টের জেরে অস্বস্তি বেড়েছে রেলেরই।
গত ১৭ জুন রাঙাপানি স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার শিকার হয় শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি মালগাড়ি এবং মৃত্যু হয় ১১ জনের। সেই দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রেল বোর্ড সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মালগাড়ির চালক ও সহকারী চালক, যাদের ২ জনেরই মৃত্যু হয়েছে ঘটনাস্থলে। পরে জানা যায়, জীবিত রয়েছেন মালগাড়ির সহকারী চালক।
এরপর সেই দুর্ঘটনার তদন্তে নামে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালক নিয়ম মেনে ট্রেন চালানোতেই ঘটেছে দুর্ঘটনা।
রিপোর্টে উঠে এসেছে, ঘটনার দিন সকাল ৫টা ৫০ মিনিট থেকে খারাপ হয়ে গেছিল অটোমেটিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা। যার ফলে পেপার সিগন্যালে ভিত্তি করে চলছিল ট্রেন। দুর্ঘটনার আগে পর্যন্ত পেপার সিগন্যালে ওই লাইনে পার করেছে ৮টি ট্রেন ও মালগাড়ি। নিয়ম অনুযায়ী, পেপার সিগন্যালে ঘণ্টায় ১৫ কিমি বেগে চালাতে হয় ট্রেন। কিন্তু কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালক ছাড়া কোনো ট্রেনই পেপার সিগন্যালের নিয়ম মানেননি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়িটি রাঙাপানি স্টেশন ছাড়ার পর ছুটছিল ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার বেগে। পরে বিপদ বুঝে ব্রেক কষলেও, সংঘর্ষের সময় মালগাড়ির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪০ কিমি। এর আগে যে ট্রেনগুলি পেপার সিগন্যালে রাঙাপানি স্টেশন পার করেছে তাদেরও গতি ছিল একই রকম।
রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, একমাত্র কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালক বাদে পেপার সিগন্যালে ট্রেন চালানোর নিয়ম জানা ছিল না এই ট্রেনগুলির চালকদের। রেলের প্রশিক্ষণের ত্রুটিতেই যে এই দুর্ঘটনা, তা উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে অধিকাংশ ট্রেনের ম্যানেজারের কাছে ওয়াকি টকি নেই। ফলে কোনও ট্রেন অতিরিক্ত গতিতে ছুটলেও গেটম্যান বা স্টেশন ম্যানেজারের পক্ষে সেই ট্রেনের চালককে সতর্ক করা সম্ভব নয়।