প্রকৃতি রক্ষায় ভারতের স্থান তলানিতে
নরেন্দ্র মোদি একপাল চিত্রগ্রাহকদের নিয়ে মনের আনন্দে জাঙ্গল সাফারি করেছেন সর্বত্র। অথচ এই সব জঙ্গলে বন্যপ্রাণের অবস্থা যে আদৌ ভালো নয়, তা দেখতেই ভুলে গিয়েছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরির মতো মানবকল্যাণ বিষয় এখানে যে উপেক্ষিত তা কয়েকদিন আগেই জাতিসংঘের এক রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দরিদ্র মানুষের বাস ভারতে। মানুষের কল্যাণই যেখানে গৌণ সেখানে প্রকৃতির দফারফা হবে সেই স্বাভাবিক। প্রকৃতি সংরক্ষণ সূচক বলছে, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে ভারত ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৭৬ তম স্থানে রয়েছে।
১০০ নম্বরের মধ্যে আমাদের দেশ পেয়েছে ৪৫.৫। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ভারতের জমি ব্যবহারের পদ্ধতি খুব খারাপ। সেই সঙ্গে জীববৈষম্য ভারতে চূড়ান্ত ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যার জেরেই ভারত ক্রমতালিকায় এতটা নিচে নেমে গিয়েছে।ভারতে প্রতিনিয়ত যেভাবে জঙ্গলের জমি দখল, শিল্পের সম্প্রসারণ ও জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের প্রয়োগের কারণে কমছে জঙ্গল, তা উঠে এসেছে সমীক্ষায়। বর্তমানে গোটা দেশের মাত্র ৭.৫ শতাংশ জমি ও ০.২ শতাংশ জলভাগ বন্যপ্রাণ ও প্রকৃতির জন্য সংরক্ষিত এলাকা হিসাবে ধার্য রয়েছে।
স্থলজ প্রজাতির সুরক্ষায় ভারত ১০০-র মধ্যে ৭৩ পেয়েছে। পাশাপাশি এও উঠে এসেছে যে, বিশ্বের অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসার ক্ষেত্রে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। বন্যপ্রাণীর বেচাকেনায় বার্ষিক আনুমানিক ১৫ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের এই ব্যবসার অংশ ভারত। ২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে গোটা দেশের সবুজে ঢাকা এলাকার ২৩,৩০০ স্কোয়্যার কিলোমিটার মুছে গিয়েছে। এমনকি ঘাস জমি কমে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে প্রবাল প্রাচীরের চরিত্রও। ৬৭.৫ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের জলের প্রাণী ও ৪৬.৯ শতাংশ বিভিন্ন প্রজাতির স্থলের প্রাণীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এই কারণেই জীববৈষম্য ক্রমশ ভারতে বিপদের মুখে পড়েছে।