পরিচয়পত্র নিয়ে নির্দেশিকা জারি যাদবপুরে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরিচয়পত্র – এই দুটো শব্দ একসঙ্গে খাপ খায়না। কিন্তু স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর থেকেই সিসিটিভি ও বহিরাগতদের ঢোকার বিরুদ্ধে উঠছে আওয়াজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন এই নতুন নির্দেশিকাগুলির কথা। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া ‘বৈধ’ পরিচয়পত্র ছাড়া রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা যাবে না। এখানেও প্রশ্ন উঠছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাড়া আর কারোর কেন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এতো রাতে প্রবেশের দরকার পড়ে?
হস্টেল-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হবে সিসি ক্যামেরা, জানিয়েছেন স্নেহমঞ্জু দেবী। ইতিমধ্যে বৃহস্পতিবার ফের যাদবপুর কর্তৃপক্ষের কাছে ১২টি প্রশ্নের জবাব-সহ বিভিন্ন তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে ইউজিসি। কারণ হিসেবে তারা বলেছে যে আগের পাঠানো রিপোর্টে তারা একেবারেই সন্তুষ্ট নয়।
একাধিক নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়:
- বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সব গাড়ি বা দু’চাকা প্রবেশ করবে, সেগুলিতে কর্তৃপক্ষের দেওয়া স্টিকার থাকতে হবে।
- যে সব গাড়িতে কর্তৃপক্ষের দেওয়া স্টিকার থাকবে না, প্রবেশের সময় সেগুলির রেজিস্ট্রেশন নম্বর গেটে জানাতে হবে। সে সব তথ্য রাখবেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
- নিরাপত্তারক্ষীরা চাইলে গাড়িচালক এবং যাত্রীদের ‘বৈধ’ পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য যাঁরা আসবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অন্য কোনও ‘বৈধ’ পরিচয়পত্র দেখিয়ে তবেই প্রবেশ করা যাবে ক্যাম্পাস চত্বরে।
- গেটে রাখা থাকবে রেজিস্টার।
- প্রবেশকারী যে ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন, তার বিষয়ে বিশদে সমস্ত তথ্য ওই খাতায় নথিভুক্ত করতে হবে।
প্রসঙ্গত এই বিষয়ে বুধবার হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে মামলা দায়ের করেন তৃণমূলের ছাত্রনেতা সুদীপ রাহা। তারপর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয়, জানা যাচ্ছে আধিকারিক সূত্রে।
স্বপ্নদ্বীপের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। ন’জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে, তদন্ত করছে পুলিশ। কিন্তু এরই মাঝে, বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জুকে চিঠি পাঠিয়েছেন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। চিঠিতে যাদবপুরের ঘটনাকে ‘র্যাগিং এবং আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ যেখানে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত করছে সেখানে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হল কেন।