মমতার কাছে তৃণমূলে সম্ভাব্য রদবদলের রিপোর্ট পেশ অভিষেকের
উপনির্বাচন মিটলেই বিরাট রদবদল তৃণমূল কংগ্রেসে। তৃণমূলের অন্দরের খবর এমনটাই। কোথায় কোন নেতৃত্ব বদল হবে? সূত্রের খবর, সেই তালিকা ইতিমধ্যেই জমা পড়ে গিয়েছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। গত ২১ জুলাই, তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে মঞ্চ থেকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, লোকসভা ফল খারাপ হয়েছে, সেখানে নেতৃত্ব বদল করা হবে। এবার কি সেই ঘোষণাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে? সূত্রের খবর, আনুমানিক ১২৫টি পুরসভায় রদবদল হবে। যে সব মিউনিসিপ্যাল এলাকায় তৃণমূলের খারাপ ফল হয়েছে, সেখানেই আনা হবে বদল। কাউন্সিলর এবং সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানা গিয়েছে। ২০২৪-এর ফলাফলই হবে মাপকাঠি। শুধু পুর নেতৃত্বই নয়, বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলাতেও জেলা সভাপতি বদলের প্রস্তাব দিয়েছেন অভিষেক। তৃণমূলের মোট ৩৫টি সাংগঠনিক জেলা আছে। তার মধ্যে ১০-১২টিতে সভাপতি বদল করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে পারফর্ম্যান্স বা কর্মদক্ষতার ওপর জোর দিতে চাইছেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, দলের প্রতি আনুগত্যই নয়, নেতৃত্ব বদলের ক্ষেত্রে শেষ কথা বলবে পারফর্ম্যান্সই।চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার শাসকদলের ফল ছিল নজরকাড়া। বিয়াল্লিশের মধ্যে ২৯ টি আসনই এসেছিল তৃণমূলের দখলে। বিজেপি আটকে গিয়েছিল বারোয়। তবে এমন ফলাফলে আত্মতুষ্টি নয়, বরং আরও সতর্ক হয়েছে শাসক শিবির। তৃণমূল স্তর থেকে সংগঠনকে আরও মজবুত করতে খোলনলচে বদলে ফেলার নীল নকশা করেও ফেলেছে শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চেই সেকথা ঘোষণা করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, তিনমাসের মধ্যে জেলা সভাপতি পদে রদবদল করা হবে। বলামাত্রই কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। কারা বাদ পড়ছেন, কারা নতুন পদে আসছেন, সেসব অভিষেক নিজে সুপারিশ করে গিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে সেই খসড়া তিনি তুলেও গিয়েছিলেন। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছিল, রাজ্যের অধিকাংশ পুরসভা জোড়াফুলের হাতে থাকলেও শহর এলাকার কিছু জায়গায় বিজেপির ভোট বেড়েছে। কলকাতা-সহ বহু পুরসভায় অনেক ওয়ার্ডে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে বিজেপি লিড নিয়েছে। একই ভাবে রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে জোড়াফুলের আধিপত্য থাকলেও পঞ্চায়েত ভোটের সাফল্যের প্রতিফলন লোকসভা নির্বাচনে হয়নি। কিন্তু ২০২৬ সালে আরও বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসতে চাইছে তৃণমূল। আর এই প্রস্তুতি তা নিয়েই বলে মনে করছে রাজনীতির কারবারিরা।