আদি গঙ্গায় চলবে নৌকা
জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ ছিল ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের অধীনে সম্পূর্ণ করতে হবে আদিগঙ্গার সংস্কার। ২০২৫ সালের ১৫ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে হবে কাজ শেষের রিপোর্ট। সেই মতোই আগামী বছরের পুজোর আগেই সম্পূর্ণ হবে আদিগঙ্গা সংস্কারের কাজ। এমনটাই জানা গিয়েছে কলকাতা পুরসভা সূত্রে। এছাড়া, গঙ্গা দূষণ নিয়ে প্রচার চালানোর পাশাপাশি নদীর দূষণ রোধে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
তিন দিন ধরে কলকাতায় চলছে গঙ্গা উৎসব। ‘আদিগঙ্গা পরিষ্কার, আমাদের অঙ্গীকার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গঙ্গা উৎসব পালন করেছে কলকাতা পুরসভা। সোমবার সেই উৎসবে যোগ দেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। লঞ্চে চেপে গঙ্গার ঘাট পরিদর্শন করেন তিনি। ফিরহাদের সঙ্গে ছিলেন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, তারক সিংহ, সন্দীপন সাহা, অসীম বসু প্রমুখ। পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, গড়িয়া থেকে মেটিয়াবুরুজ পর্যন্ত আদি গঙ্গার দৈর্ঘ্য হল ১৫ কিলোমিটার। ধাপে ধাপে এই অংশের কাজ শেষ করা হবে। এই প্রকল্পে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। আদি গঙ্গায় ব্রিজের উপর থেকে যাতে নোংরা না ফেলা যায় তার জন্য ব্রিজগুলি লোহার জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। এমনভাবে আদি গঙ্গার সংস্কার করা হচ্ছে যে গড়িয়া ঢালাই ব্রিজ পর্যন্ত তাতে নৌকা পর্যন্ত চালানো যাবে।
এদিকে, এদিন গঙ্গা দূষণ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মেয়র। তিনি জানান, বহু নাগরিক আছেন যারা গঙ্গাকে ভ্যাট মনে করে ইচ্ছেমতো গঙ্গায় জঞ্জাল ফেলেন। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে নিশানা করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত গঙ্গাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসা। কিন্তু কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনও রকমের সাহায্য পাওয়া যায় না। তবে সৌভাগ্য এই যে, কিছু সংগঠন আছে যারা গঙ্গা দূষণ নিয়ে কাজ করছে। এছাড়া গঙ্গাপাড়ে আরও সুবজায়ন করার নির্দেশ দেন মেয়র। পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, ভাঙন রোধ করতে সক্ষম এমন গাছই লাগানো হবে।
উল্লেখ্য, আদি গঙ্গায় পলি জমে যাওয়া নিয়ে এবং জলে ভাসমান আবর্জনা নিয়ে পরিবেশ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্য সরকারকে। এমনকী পরিবেশ আদালত এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভাকে ভর্ৎসনা করেছিল। তারপরেই মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে নগর উন্নয়ন দফতর, কলকাতা পুরসভা, কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি সহ একাধিক দফতর ও সংস্থা বৈঠক করে। তাতে সিদ্ধান্ত হয় বেশ কয়েক পর্যায়ে আদিগঙ্গা সংস্কার করা হবে। প্রথম পর্যায়ে টালি নালার ৪.৭ কিলোমিটার অংশ পরিষ্কার করা হয়েছে। এর জন্য ব্যয় হয়েছে ১১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। আর দ্বিতীয় ধাপের কাজের জন্য ধার্য করা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা।