ব্যতিক্রমী সুব্রত
আজ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকী। গত বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জেতার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বালিগঞ্জের প্রিয় সুব্রত জেঠু। বাংলার রাজনীতির অন্যতম পথপ্রদর্শক ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিনের কংগ্রেসী, তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মন্ত্রী।
১৯৪৬ সালে বজবজের সারেঙ্গাবাদে জন্মগ্রহণ করেন সুব্রত। বঙ্গবাসী কলেজ থেকে অ্যানথ্রোপলজি নিয়ে পড়াশোনা। ছাত্রাবস্থায় পরিচয় হয় সিনিয়র প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গে, যার পর থেকেই ছাত্র রাজনীতির হাত ধরে উল্কার গতিতে উত্থান।
১৯৭১ সালে ইন্দিরা কংগ্রেসের হয়ে দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়লাভ করেন সুব্রত, যার পরে ‘৭২ সালের ভোটে আবার জিতে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের সরকারে সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী (২৫ বছর বয়সে) হিসেবে দায়িত্ব নেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যাবিনেটেও তিনিই ছিলেন শেষ মন্ত্রী যিনি রাজ্যের অন্তিম কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। এরপর বালিগঞ্জ থেকে পরাজিত হন সুব্রত। কেন্দ্র বদল করে চলে যান জোড়াবাগান, তারপর চৌরঙ্গীতে।
জানা যায় ১৯৮৪র নির্বাচনে যাদবপুরের প্রার্থী বাছাই করতে যখন বেগ পাচ্ছিলো কংগ্রেস, তখন দিল্লিতে থাকা প্রিয়রঞ্জনের কাছে আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম তাঁকে না জিজ্ঞেস করেই প্রস্তাব করেন সুব্রত, যার জেরেই লঞ্চ হয় মমতার কেরিয়ার। শোনা যায়, এই কৃতজ্ঞতায় বারবার মমতার সঙ্গ ত্যাগ করে ফিরে এলে তাঁকে সম্মানজনক পদ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০০০ সালে ঘোর বাম জমানায় কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে জেতে তৃণমূল, যার আগেই জোড়াফুল শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন সুব্রত। মেয়র হন তিনি, যে সময়কালকে কলকাতা পুরসভার স্বর্ণযুগ বলে মনে রেখেছেন সাধারণ মানুষ।
সুব্রত ব্যতিক্রমী। সুব্রত আদতেই “কাজের মানুষ, কাছের মানুষ”। আজ তাঁর মৃত্যুদিবস। নিউজনাওয়ের পক্ষ থেকে রইলো শ্রদ্ধা।