বাংলা বিভাগে ফিরে যান

সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আরাধনা নয়, মহিষাসুর বধে চোখের জলে ভাসে এই গ্রাম!

অক্টোবর 7, 2024 | < 1 min read

সারা বিশ্ব উৎসবে খুশিতে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে তখনই শোকে মুহ্যমান থাকে পুরুলিয়ার এক আদিবাসী সম্প্রদায়। দুর্গার আগমনের উৎসব নয় বরং মহিষাসুরের পরাজয়ের শোক পালন করেন তাঁরা। পুরুলিয়া জেলার ফলাওরা গ্রাম। সেখানেই বাস খেরওয়াল সাঁওতালদের। তাঁদের মতে দুর্গা আসলে এক উচ্চবর্ণের নারী। যিনি ছল করে তাঁদের রাজা হুদুর দুর্গা অর্থাৎ মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। তাই এখানে দুর্গতিনাশিনী নয় পুজো পান মহিষাসুর। নিজেদের জন্য নতুন জামা, নতুন জিনিস কেনার বদলে অসুররাজকে উৎসর্গ করতে কেনা হয় উপহার। এআদিবাসী ‘অসুর জনজাতির’ লৌকিক বিশ্বাস অনুযায়ী, অসুররা এই দেশের প্রাচীন জনজাতি। তাদের নেতার নাম ছিল ‘‌হুদুড় দুর্গা’‌ অর্থাৎ  ‘‌মহিষাসুর’‌। সাঁওতালি ভাষায় দুর্গা পুংলিঙ্গ।

সাঁওতালি ভাষায় ‘‌হুদুড়’‌ কথার অর্থ প্রচণ্ড জোরে বয়ে চলা বাতাস। আর্য সেনাপতি ’ইন্দ্র’ ছলনা ও কৌশলের আশ্রয় নিয়ে এক দেবীকে হুদুড় দুর্গার কাছে পাঠান। ওই দেবী হুদুড় দুর্গাকে বিয়ে করার পর নবমীর দিন হুদুড় দুর্গাকে হত্যা করেন। সেই কারণে ওই দেবী দুর্গাদেবী নামে পরিচিতি পান। অসুর জনজাতির মানুষজন এই লোককথাকে বিশ্বাস করেই শতকের পর শতক দুর্গোৎসবের চারদিন শোকের পরব দাসাই পালন করে আসছেন।

আদিবাসী পুরুষেরা নারীর বেশে, মাথায় ময়ূরের পুচ্ছ লাগিয়ে বুক চাপড় ‘ভুয়াং’ নাচের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে দুঃখের গান গেয়ে এই সময়ে খুঁজে বেড়ান তাদের মহিষাসুর বা হুদুড়দুর্গাকে।শুধু পুরুলিয়া নয়, অসুর অথবা মহিষাসুর পুজোর ঐতিহ্য বাংলার আরও বেশ কিছু আদিবাসী গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে, যা হুদুর দুর্গা নামে পরিচিত। উপজাতি ও দলিত সম্প্রদায়, যেমন বাগদি, সাঁওতালি, মুন্ডা, নমঃশূদ্ররা মহিষাসুরের শহিদ দিবস পালন করেন।

Images- BBC

FacebookWhatsAppEmailShare

আরো দেখুন

ধেনুয়া গ্রামে এক দিনেই শেষ দুর্গাপুজো! বোধনের দিনেই বিসর্জন
FacebookWhatsAppEmailShare
রানাঘাটের এই পুজোতে নবমীতে হয় কাদা খেলা
FacebookWhatsAppEmailShare
নবমীতে অসুরদের উদ্দেশে ‘মাসভক্তবলি’ পুজো অর্পণ করা হয় সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের পুজোয়
FacebookWhatsAppEmailShare