সপ্তমীতে নবপত্রিকা স্নান, এই নবপত্রিকাই কি আসলে কলাবউ?
কেউ বলেন কলাবউ। আবার গণেশের পাশে থাকে বলে কেউ কেউ বলেন গণেশের বউ। আসলে সেটি নবপত্রিকা। দেবী দুর্গার পূজার সঙ্গেই ওতপ্রোত জড়িয়ে এই নবপত্রিকার পূজা। নবপত্রিকার পূজা আসলে ইঙ্গিত দেয় মানুষের উৎসব পালন এবং ধর্মাচরণের বহু প্রাচীন রীতির। তাই দুর্গাপুজোর যেমন মাহাত্ম্য, তেমনই স্বতন্ত্র তাৎপর্য আছে নবপত্রিকা এবং তার পুজোরও।নবপত্রিকা আসলে দুর্গারই রূপ। এই গাছ আদৌ গণেশের স্ত্রী নন, বরং মা দুর্গা অর্থাৎ গণেশের জননী। নবপত্রিকা বলতে বোঝানো হয় নটি গাছকে। যাতে মূলত দৃশ্যমান কলাগাছ। এটি ছাড়াও ৮ টি গাছ থাকে। যা জড়িয়ে ফেলা হয় শ্বেত অপরাজিতার লতা ও ন গাছা হলুদ সুতোয়। তারপর গাছ-গোছাকে গঙ্গায় স্নান করাতে যাওয়া হয়। নবপত্রিকার সঙ্গে ফলনের দেবীর বন্দনারও মিল খুঁজে পান অনেকে। কী কী গাছ থাকে এই নবপত্রিকায় ? কলা গাছ, কচু গাছ, হলুদ গাছ, জয়ন্তী গাছ, বেল গাছ, ডালিম গাছ , অশোকের ডাল, মান কচু গাছ এবং ধান গাছ। তাদের পরানো হয় লালপেড়ে শাড়ি। তারপর তাকে সিঁদুরের টিপ পরানো হয়। নবপত্রিকার পুজো প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পুজো। এর পিছনে একেবারে স্বতন্ত্র ব্যাখ্যা দিয়েছেন গবেষক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী। ‘দুর্গায়ৈ সপরিবারায়ৈ’ গ্রন্থে লেখক ব্যাখ্যা দিয়েছেন, দুর্গাপূজার সপ্তমী সকালবেলায় উঠেই প্রথম এবং প্রধান কাজটি হল নবপত্রিকার প্রতিষ্ঠা, যাকে লৌকিক ভাষায় বলে কলা-বউ স্নান ।