‘সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্টের জমি তৈরি, প্রচুর কর্মসংস্থান’, রাজ্যে মার্কিন বিনিয়োগ নিয়ে মন্তব্য মমতার
রাজ্যে মার্কিন সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রস্তাবিত সেমিকন্ডাক্টর কারখানার জন্য জমি ইতিমধ্যেই প্রস্তুত। প্রাথমিকভাবে ওই সংস্থা একটি জমি পছন্দ করেছে বলেও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে কলকাতায় নবনিযুক্ত মার্কিন কনসাল জেনারেল ক্যাথি জাইলস-ডিয়াজের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। তিনি ছাড়াও ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যকে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের হাব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বহুদিন ধরেই চেষ্টা চলছে। বাংলায় সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে যাবে এবার।
প্রধানমন্ত্রীর আমেরিকা সফরের সময় ঘোষিত প্রকল্পটির জন্য রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ওয়েবেল এবং তথ্যপ্রযুক্তি দফতর বহুদিন ধরে ওই সংস্থার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছে। রাজ্যে ওই কারখানা তৈরির ঘোষণা সেই চেষ্টারই সুদূরপ্রসারী ফল। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে তেমনি এ-রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের মেধাশক্তিকে সম্পূর্ণভাবে কার্যকরী করা যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন। তিনি জানান, আমরা জমি তৈরি করে রেখেছি। ওঁরা একটা জমি দেখেছেনও। দুবাইয়ের লুলু গ্রুপও আসছে। তাদের জন্যেও জমি দেখানো হয়েছে। এই সেন্টারটা হলে তা বিশ্বমানের হবে। আমাদের ট্যালেন্টকে কাজে লাগাতে পারবে। পরিকাঠামোটা মেধাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা খুবই দক্ষ। আমরা বলেছি জানুয়ারিতে একটা রোড ম্যাপ তৈরি করতে বিজিবিএস-এর আগে। এটা বাংলার জন্য একটা বড় অ্যাচিভমেন্ট। আমরা খুব খুশি। আগামী বছরের ৫ এবং ৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর বসছে। তার আগে বিনিয়োগকারী মার্কিন সংস্থা ও সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে ওই বিশেষ কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এদিন মার্কিন কনসাল জেনারেলের সঙ্গে এই প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ও আধিকারিকদের। রাজ্যের সামগ্রিক বিনিয়োগবান্ধব ভাবমূর্তি তাঁর সামনে তুলে ধরা হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলায় প্রচুর চাকরি হচ্ছে। ৬টা ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর হচ্ছে। দুটো পাওয়ার প্ল্যান্ট করছে রাজ্য সরকার। দুটো বেসরকারি সংস্থাও তৈরি করছে। তিনি বলেন, জিন্দলরাও পাওয়ার প্ল্যান্ট করছেন সম্ভবত। আরও ২-৩টে স্টিল প্ল্যান্ট হচ্ছে। আমি তো গতকাল বর্ধমান রোড ধরে ফেরার সময় দেখলাম হুগলি, হাওড়া ভর্তি হয়ে গিয়েছে। দুপাশে কোনও জমি খালি নেই। সব জায়গায় শিল্প হয়েছে। টোটালটাই ইন্ডাস্ট্রি। বানতলা চর্মনগরীতে ৫ লক্ষ চাকরি ইতিমধ্যেই হয়েছে, আরও আড়াই লক্ষ কর্মসংস্থান হবে বলে জানান তিনি।সম্প্রতি আমেরিকা সফরে গিয়ে সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট তৈরি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা সেরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত তিন বছর ধরেই ওয়েবেলের আইটি বিভাগ এ-নিয়ে কাজ করছে। যেহেতু দুই দেশের মধ্যে এই কাজ, তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, এই যে সাফল্য এল তা আগামী দিনে বাংলার জন্য গর্বের। প্রচুর কর্মসংস্থান হবে।