কোচবিহারে নররক্তেই পুজো হয় বড়দেবীর
কোচবিহারের বড়দেবীর পুজোর ইতিহাস ৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো। দুর্গা এখানে পূজিতা হন বড়দেবী রূপে। কোচবিহারের বড়দেবীর পুজোর দায়িত্বে রয়েছে দেবোত্তর ট্রাস্ট। এই ট্রাস্ট পর্যটন দফতরের অধীনে। তাই পুজোর যাবতীয় খরচ মেটায় রাজ্য সরকার। একসময় রাজারা দিলেও, বর্তমানে মহাষ্টমীর দিন প্রথম অঞ্জলি দেন জেলাশাসক। এরপর সাধারণ মানুষ অঞ্জলি দেন। মহাষ্টমীর দিন কোচবিহারের বড়দেবীর পুজোয় পাঁঠা বলি, পায়রা বলির পাশাপাশি, মোষ বলিও দেওয়া হয়।
এই ‘বড় দেবী’র পুজোর পৃষ্ঠপোষক ছিল কোচবিহারের রাজবংশ। শোনা যায়, আনুমানিক ১৫১০ সালে, বালক বয়সি বিশ্ব সিংহ এবং তাঁর ভাই শীষ্য সিংহ খেলার ছলে দেবীর আরাধনা শুরু করেন। ময়নার ডালকেই দেবীরূপ দিয়ে পুজো করেন তাঁরা। তবে পুজো আড়ম্বরে পরিণত হয়ে মহারাজা নরনারায়ণের আমলে।কথিত আছে, স্বপ্নে দেবীকে যে রূপে দেখেছিলেন রাজা নরনারায়ণ, সেই রূপেই আজও পূজিত হন দেবী। সবমিলিয়ে এই পুজোর বয়স প্রায় ৫০০ বছর। অন্য় প্রতিমার থেকে এই প্রতিমা সম্পূর্ণ আলাদা।
এখানে দেবী রক্তবর্ণা, ভয়ের উদ্রেক হয়। ছেলে-মেয়ে নিয়ে মর্ত্যে আগমন ঘটে না তাঁর, বরং সঙ্গে থাকেন দুই সখী জয়া এবং বিজয়া। দেবীর বাহন বাঘ এবং সিংহ।শ্রাবণের শুক্লা অষ্টমী থেকেই এই পুজোর সূচনা হয়। ডাঙ্গর আই মন্দিরে ময়না কাঠ পুজো করা হয় প্রথমে। সেই কাঠ ‘বড় দেবী’র মন্দিরে এনে, কাঠামোর করে, তার উপর সুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ।কথিত আছে, এক সময় নরবলি হত দেবীর পুজোয়। তা নিয়ে অবশ্য নেই কোনও প্রকৃত তথ্য। তবে নররক্ত এখনও গভীর রাতের গুপ্তপুজোয় দেবীর উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়।