বিচার চাইতে গিয়ে নিজেদের দায়-দায়িত্ব-শপথ সব ভুলে গেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা?
আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক মৃত্যুতে বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। প্রতিমুহূর্তে ধর্না মঞ্চের ছবিটা সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসছে যেখানে কখনও আলোড়িত হচ্ছে নাচে গানে প্রতিবাদের নামে উল্লাস, আবার কখনও কুৎসিত ভাষায় স্লোগান।দিনের পর দিন ডাক্তারির শপথ ভুলে সকাল থেকে রাত আন্দোলনের নামে চিঠি চালাচালি, মিটিং আর মধ্যরাতে সাংবাদিক বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অন্যদিকে হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করা যাচ্ছে না। কারণ পরিষেবা দেওয়ার মতো ডাক্তার নেই।
সুপ্রিম আদালতে চিকিৎসকদের আইনজীবীরা বলছেন কোথাও কোনও সমস্যা নেই কারণ সিনিয়র ডাক্তাররা নাকি ডাবল ডিউটি করছেন। পুজোর আগে বন্যায় প্লাবিত বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বহু মানুষের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে বারবার জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধ করা হয়েছিল কাজে ফেরার জন্য। কিন্তু তাঁরা ব্যস্ত নিত্যনতুন দাবি নিয়ে সরকারের সঙ্গে বৈঠকের মেইল পাঠাতে। মধ্যরাতে জিবি মিটিং করে সকলকে জানিয়ে দেওয়া যে আজও কর্মবিরতি উঠছে না। এটাই যেন প্রতিদিনের শিডিউল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবার প্রশ্ন করছেন সাধারণ মানুষ, আর কবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে? আর কত রোগীকে পরিষেবা না পেয়ে ফিরতে হবে? আর কত পরিবারে স্বজন হারানোর শোক নেমে আসবে? সুপ্রিম কোর্ট দু’বার বলার পরও ডাক্তাররা অনড় কোন স্পর্ধায়!এখনও এত টালবাহানা কেন? তাহলে কি অভয়ার জন্য বিচার চাইতে গিয়ে নিজেদের দায়-দায়িত্ব-শপথ সব ভুলে মেরে দিয়েছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা? বুধবার পিজি হাসপাতালে কার্যত এমনই প্রশ্ন উঠল রোগীদের মুখে মুখে।
এখনও পর্যন্ত ডাক্তারহীনতায় বিনা চিকিৎসায় রাজ্যজুড়ে মারা গিয়েছেন ৩৯ জন। সেই তথ্য সুপ্রিম কোর্টেও জানান রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বাল। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য শুনেই চিকিৎসায় ফেরতের জন্য আন্দোলনকারীদের কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে ডেডলাইন দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। তারপর দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকে অবমাননা করেই যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তার প্রভাব পড়ছে রোগীদের উপর।