পুরোহিতের মেয়েকে খেয়ে ফেলেছিলেন, পেটকাটি দুর্গা ঐতিহ্যে আজও অমলীন
মুর্শিদাবাদ জেলার অধিকাংশ গ্রামীণ বনেদি পরিবারের দুর্গাপুজো ঘিরে লুকিয়ে রয়েছে অনেক ইতিহাস। রঘুনাথগঞ্জের গদাইপুরের পেটকাটি দুর্গাকেও ঘিরে লুকিয়ে রয়েছে এক প্রাচীন লোককথা। রঘুনাথগঞ্জের গদাইপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গাপুজো প্রায় চারশো বছরের প্রাচীন। সেই সময় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার আর্থিকভাবে সম্পন্ন ছিল। কথিত আছে, দুর্গাপুজোর জন্য এক দরিদ্র ব্রাহ্মণকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
স্ত্রী ও একমাত্র কিশোরী মেয়েকে নিয়ে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের মন্দিরের পাশে থাকতেন সেই পুরোহিত। কোনও এক বার সন্ধিপুজোর সময় পুরোহিতের মেয়ে পুজোর উপচার তৈরি করছিল, সেই সময়ে হঠাৎই সে নিখোঁজ হয়ে যায়। চারপাশে খুঁজেও পাওয়া যায়নি সেই মেয়েকে। কথিত আছে, পরে মায়ের পেট থেকে সেই মেয়ে বেরিয়ে আসে। তারপর থেকেই পেটকাটি পুজো হিসেবে পরিচিত এই পুজো।
এখনও দেবী প্রতিমার মুখে এক টুকরো কাপড় লাগানো থাকে। পায়ে বাঁধা থাকে শেকল। সেই প্রাচীন রীতি মেনে প্রতিমা তৈরির সময় কেটে রাখা হয় পেট। ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে সেই থেকেই দেবীর পায়ে প্রতীকী শেকল পরানো থাকে।দশমীর দিন নৌকো করে পেটকাটি দুর্গাকে আনা হয় রঘুনাথগঞ্জ সদর ঘাটে।একে একে সমস্ত দুর্গাকে আনা হয় সদর ঘাটে। বসে মেলা। চলে বাইচ প্রতিযোগিতা। পেটকাটি দুর্গার সামনে একে একে বির্সজন হয় দুর্গা প্রতিমা, তার পর একাদশীর সকালে রঘুনাথগঞ্জ শ্মশানঘাটে পেটকাটি দুর্গাকে বির্সজন দেওয়া হয়।