বিজেপির ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ চেয়ে পথ অবরোধ প্রাণ কেড়ে নিলো দুর্গার
‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ প্রসূতির প্রাণ কেড়ে নিল। আরজিকর হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের থেকে চিকিৎসা না পেয়ে শুক্রবার মৃত্যু হয়েছিল কোননগরের এক যুবকের। সেই ঘটনার পরই ভাজপার উই ওয়ান্ট জাস্টিস এর নামে অবস্থান-বিক্ষোভের জেরে প্রাণ গেল এক প্রসূতির। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত হল দুর্গা শীলের। বয়স ২৩। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে ফুলিয়া ও রানাঘাটের ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে। কয়েক বছর আগে ফুলিয়ার বাসিন্দা হীরা শীলের সঙ্গে বিয়ে হয় দুর্গার। এদিন আচমকা বাড়িতেই পা পিছলে পড়ে যান।
দুর্গার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স করে দুর্গাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু সেইসময় ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদে ভাজপার অবস্থান বিক্ষোভ চলছিল। হাবিবপুর এর কাছে বিক্ষোভের জন্য আটকে পড়ে অ্যাম্বুলেন্স। গোটা জাতীয় সড়ক জুড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে একের পর এক গাড়ি। অ্যাম্বুলেন্স কে বার করার জন্য গাড়ির চালকদের হাত-পায়ে ধরে প্রসূতির স্বামী। অ্যাম্বুলেন্স বের করার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি।
প্রায় ২০ মিনিটের উপরে জাতীয় সড়কের উপরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় পুলিশের। কোনোমতে পিছনের গাড়ি ঘুরিয়ে অ্যাম্বুলেন্স থেকে বের করে দেওয়া হয়। যদিও ততক্ষণে অনেকটা সময় পার হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় ফুলিয়া হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসার দুর্গা শীলকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এরপরে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন তার স্বামী হিরা শীল।
তিনি বলেন, এ কেমন আন্দোলন যার জন্য মানুষের প্রাণ চলে যায়। বিজেপির এই অবস্থার বিক্ষোভের জন্য আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়ে গেল। এই অবরোধ প্রতিবাদের মানে কি? ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন, শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রত্যেকেই আন্দোলন করতে পারে। আন্দোলন করার অধিকার সবারই রয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে জরুরী পরিষেবা আটকে দেওয়া যায় না। জরুরী পরিষেবাকে ছাড় দেওয়া উচিত। বিজেপির কাছে আন্দোলন বড় হল?
তাদের কাছে একটা মানুষের জীবন বড় নয়? যদি মানুষের জীবন বড় হতো তাহলে আজকে এভাবে একজন মরতে হত না। আমরা পরিবারের পাশে আছি। এই ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা জানাই। পরিবারের সদস্যদের সব রকমের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি আমরা।