সপ্তাহান্তে নিম্নচাপের ভ্রুকুটি
দুর্গা পুজোর বাকি আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ। স্বাভাবিকভাবেই এই উইকেন্ডে পুজোর কেনাকাটা শুরু করার প্ল্যান করছিলেন অনেকেই। তাদের প্রত্যেকেরই মনে এখন প্রশ্ন, হঠাৎ করে বৃষ্টি এসে মাটি করে দেবে না তো সপ্তাহান্তের শপিং? আলিপুরের হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ফের তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ। যার জেরে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণবঙ্গ ভিজবে বৃষ্টিতে। শনি ও রবিবার বাড়তে পারে বৃষ্টির পরিমাণ।
জানা যাচ্ছে, দক্ষিণ ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলের বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। যা আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি নেমে আসবে হাওড়া, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে। এরমধ্যে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বাড়তে পারে তাপমাত্রা। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার, মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারী ও অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানাতেও। ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, মেঘালয়, মণিপুর-সহ বিভিন্ন রাজ্যে। পশ্চিম মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সংগঠিত ঘূর্ণাবর্ত ইতিমধ্যেই নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। যা ধীরে ধীরে দক্ষিণ ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূল বরাবর উত্তর দিকে এগোবে।
বঙ্গোপসাগরের এই নিম্নচাপটি উত্তর ওড়িশা ও সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ উপকূল দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকলে দক্ষিণবঙ্গে প্রচুর বৃষ্টি হবে। এই নিম্নচাপের গতি প্রকৃতি নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন আবহাওয়াবিদরা। কারণ দক্ষিণ চীন সাগরে ইতিমধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে এক বিধ্বংসী টাইফুন ঝড়। ঝড়টি একাধিক দেশের স্থলভূমি অতিক্রম করবে। শেষ পর্যন্ত এটি দুর্বল অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটির সঙ্গে মিশে শক্তি সংগ্ৰহ করতে পারে। আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে এটা হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। তবে এখনও রেড এলার্ট জারি করার কোনো প্রয়োজনীয়তা দেখা যাচ্ছে না। দক্ষিণ চীন সাগরে টাইফুন হয়তো বঙ্গপোসাগরের নিম্নচাপের সাথে মিলিত হবার অনেক আগেই দিক পরিবর্তন করে ফেলবে। এর ফলে আবহাওয়ার আদ্রতা বাড়বে, তার সাথে বাড়বে প্যাচপ্যাচে গরম।
এই উইকেন্ডে পুজোর শপিং করতে গিয়ে বাঙালির ভিজে চান করা কনফার্ম। সেটা হতে পারে বৃষ্টিতে, নয়তোবা ঘামে। এবছর মা আসছেন অক্টোবরে, অন্য বছরের তুলনায় একটু দেরিতে। তাই এখন বৃষ্টি হয়ে নিম্নচাপের কালো মেঘ কেটে গেলে, ঝকঝকে শরতের আকাশে বাঙালির পুজো কাটবে নির্বিঘ্নে।