বাংলায় রথযাত্রা – প্রথম পর্ব
সামনেই রথযাত্রা। ভারতের ওড়িশা তথা পশ্চিমবঙ্গে মূলত এই উৎসব বিশেষভাবে পালন করা হয়। সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে রয়েছে বিখ্যাত সব রথ। বাংলায় রথযাত্রার প্রসারে চৈতন্যদেবের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আজ বাংলায় রথযাত্রা – প্রথম পর্বে মাহেশের রথযাত্রা সম্পর্কে তথ্য জানানো হবে।
মাহেশের রথযাত্রা – পুরীর পর দেশে বৃহত্তম রথযাত্রা হুগলির শ্রীরামপুরের মাহেশ রথযাত্রা। মাহেশকে বলা হয় ‘নব নীলাচল’। অর্থাৎ নতুন পুরী। এইবছর মাহেশের রথ যাত্রা ৬২৮ তম বছরে পড়ল। কথিত আছে, সাধক ধ্রুভানন্দ ব্রহ্মচারী ৬২৭ বছর আগে পুরীতে গিয়ে প্রভু জগন্নাথকে ভোগ নিবেদনের জন্য স্বপ্নাদেশ পান। কিন্তু পুরীতে গিয়ে তিনি ভোগ দিতে পারেননি।
শোনা যায়, ফিরে এসে তিনি স্বপ্নাদেশ পান, গঙ্গায় ভেসে আসা নিমকাঠ দিয়ে বিগ্রহ তৈরির। তারপর সেই নিমকাঠ দিয়ে তৈরি হয় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি কিন্তু মাহেশের এই মূর্তিগুলিও সেই প্রাচীন। আগে কাঠের রথ থাকলেও, লোহার রথ তৈরি হয় ১৩৭ বছর আগে। এটি তৈরি করে মার্টিন বার্ন কোম্পানী। ১২৫ টন ওজনের এই রথ ৫০ ফুট উঁচু।
লোহার বারোটি চাকা রয়েছে।রথের সামনে রয়েছে তামার দুটি ঘোড়া এবং কাঠের দুটি রাজহাঁস। সেই সময় রথ তৈরিতে খরচ হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। চারতলা বিশিষ্ট এই রথের একতলায় চৈতন্যলীলা, দ্বিতীয় তলে কৃষ্ণলীলা এবং তৃতীয় তলে রামলীলা চিত্রিত আছে। চার তলায় বিগ্রহ বসানো হয়। মাহেশ থেকে গুন্ডিবাটি, এক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ‘মাসির বাড়ি’ যায় রথ। সেখানে ৯ দিন কাটিয়ে আবার মাহেশেই ফেরেন জগন্নাথ, সুভদ্রা এবং বলরাম। প্রচলিত রীতি অনুসরণ করে জগন্নাথ–ভক্তরা গুট্কে এবং বালা এই দুটি সন্দেশ জগন্নাথ দেবকে নিবেদন করেন