মঠ ও ফুটকড়াই এর ইতিহাস
দোলযাত্রা আসলে একটি ধর্মনিরপেক্ষ উত্সব। এদিন সকাল থেকেই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে একে অপরকে আবির আর রঙ মাখিয়ে বাড়ি বাড়ি মঠ, ফুটকড়াই প্রভৃতি শুকনো খাবার খেয়ে দোল খেলায় মত্ত থাকেন সকলে। মঠ মূলত চিনির তৈরি উঁচু শক্ত একটি মিষ্টি । সেটা মোমবাতি,ফুল, পাখি-সহ বিভিন্ন আকারের আর বৈচিত্রের মঠ পাওয়া যেত দোকানে। চুটিয়ে রঙ খেলার ফাঁকে খাওয়া হত এই মট ও ফুটকড়াই।
চিনির ছাঁচই হচ্ছে মঠ।মঠ কিন্তু বাংলার খাবার নয়, পর্তুগিজদের। প্রথম দেখা যায় ব্যান্ডেল চার্চে। ক্রিসমাসের সময় গির্জাকৃতি ছাঁচে ঢালা চিনির রসের এই মিষ্টি ছিল ওদের প্রিয়। ময়রারা প্রথমে বলত, চিনির ছাঁচ। গির্জার আকার দেখে লোক মুখে নাম হয়ে যায় মঠ। ফাগুন মাস রবিশস্যের মাস, তেমনই ছোলারও মাস।
একসময়ে পাকা ছোলার গাছে গ্রামবাংলার খেত ছেয়ে থাকত। আলের ধারে খড়ের আগুন জ্বেলে তাতে পাকা ছোলার গাছ ফেলে আধপোড়া করে ‘হোরা’ করত। ‘হোরা’ হচ্ছে আধপোড়া ছোলা। ময়রারা ছোলার বদলে কখনও কলাই বা মটরকে ভেজে ‘ফুটকলাই’ তৈরি করতেন। পরে শুধু না ভেজে, ভাজার পর ঘন রসে ফেলা শুরু হয়। নাম হয় ‘ফুটকড়াই’।