দেশ বিভাগে ফিরে যান

গত ৯ দিনে ৩০ সেকেন্ডের জন্যও সংসদে আসেননি প্রধানমন্ত্রী

জুলাই 31, 2023 | 2 min read

মণিপুর নিয়ে আলোচনার ইস্যুতে আজও উত্তাল হয় সংসদ। আজ উপরাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন দুপুর ২টোয় মণিপুর ইস্যুতে আলোচনায় প্রস্তুত সরকার। কিন্তু নিজেদের দাবিতে অনড় বিরোধীরা। তারা চান সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি ও বিবৃতি।

রাজ্যসভায় বিরোধীদের কৌশল:

আজ সংসদে ৬৫ জন ২৬৭ নোটিস জমা দিয়েছে, যা রাজ্যসভার ইতিহাসে প্রথমবার। কিন্তু দফায় দফায় আর শেষে আজ সারাদিনের মতন সংসদ মুলতুবি হয়ে যায়।

কিন্তু সরকার যদি আজ ১৭৬ রুলের আওতায় মণিপুর নিয়ে আলোচনা শুরু করতো সেক্ষেত্রে বিরোধীরা ওয়াক আউট করতো, তারা কিছুতেই আলোচনা হতে দিতেন না। তাই তারা আজ তাদের কৌশলের পদ্ধতিটা একটু বদল করেছিলেন। তারা দুই দলে ভাগ হয়ে যান। একটি দল সংসদে মণিপুর ইস্যুতে স্লোগানিয়ারিং চালায়। তখন অন্য দল সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়। সংসদের ভেতরে ও বাইরে দুইদিক থেকেই এবার সরকারকে চাপে রাখতেই এই অভিনব কৌশল বিরোধীদের।

ইন্ডিয়া জোটের তরফ থেকে এদিন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন জানিয়েছেন, “আমরা মণিপুর ইস্যু নিয়ে গভীর আলোচনা চাই। আমাদের ডেলিগেশন মণিপুরে গিয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত জরুরি বিষয়। কেন সংসদে আসতে পারবেন না প্রধানমন্ত্রী। আমরা সবাই মণিপুর নিয়ে আলোচনা করতে তৈরি। যেখানে অটল বিহারি বাজপেয়ী, মনমোহন সিং, রাজীব গান্ধীর মতন নেতারা রাজ্যসভায় এসে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন সেখানে মোদী জি কেন আসতে পারছেন না?

তারা আরও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আসুন, এসে নিজের বক্তব্য পেশ করুন, তারপর যদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে বক্তৃতা দেন তাতেও ঠিক আছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে উপেতিত থাকতে হবে, তাদের একটাই দাবি। “

২.৩০ এ রাজ্যসভা সারাদিনের মতন মুলতুবি হওয়ার পর দুপুর ২.৪৫ নাগাদ উপ-রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান, জগদীপ ধনখর আজ সংসদে তাঁর চেম্বারে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খার্গের সাথে বৈঠক করেন। দুপুর ৩.৩০ পর্যন্ত সেই বৈয়হোক চলে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংসদীয় বিষয়ক, কয়লা ও খনি মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী; আইন ও বিচার, সংসদীয় বিষয় ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী, অর্জুন রাম মেঘওয়াল; পররাষ্ট্র ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ভি মুরালীধরন; এবং সৈয়দ নাসির হুসেন।

লোকসভায় বিরোধীদের কৌশল:

মণিপুর নিয়ে লোকসভায় মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে ২৬টি বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তবে এই প্রস্তাব নিয়ে সংসদে কবে আলোচনা হবে, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্পিকার। নিয়ম মোতাবেক, প্রস্তাব পেশের পর দশ দিনের মধ্যে এই নিয়ে সংসদে আলোচনা হওয়ার কথা।লোকসভায়ও বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাবে অংশ নেবে, পিছিয়ে আসার কোন প্রশ্নই নেই।

পাশাপাশি, অনাস্থা প্রস্তাব চলাকালীন কোনরকম বিল পাস হতে পারে না, কিন্তু এই সরকার সেইসব নিয়মও মানছে না, তারা দিনে অন্তত ৪টি করে বিল পাস করাচ্ছেন যেটা অনুচিত। অনাস্থা প্রস্তাব আনা সত্ত্বেও সরকার যে ভাবে বিল পাশ করিয়ে যাচ্ছে সরকার তা সংসদীয় প্রথা-বিরোধী। ১৯৫২ সালে ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় গৃহীত নিয়মাবলীতে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার অবকাশ রাখা হয়েছিল, যে প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে হেরে গেলে ওই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। সেই সময় অনাস্থা প্রস্তাব আনতে গেলে অন্তত ৩০জন এমপি-র সমর্থন জরুরি ছিল, এখন তা বাড়িয়ে ৫০জন করা হয়েছে। তবে প্রথম দুটি লোকসভার মেয়াদে কোনও অনাস্থা প্রস্তাব আসেনি। এরপর থেকে স্বাধীন ভারতের সংসদীয় ইতিহাসে এই নিয়ে মোট ২৮বার বিরোধীরা ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন।

রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের নেতৃত্বে ২১ জন সাংসদের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। রাষ্ট্রপতির সাথে মণিপুরের বিষয়ে সাক্ষাৎ করতে চান তারা।

FacebookWhatsAppEmailShare

আরো দেখুন

বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় বন্ধ ঐতিহ্যশালী দুর্গাপুজো, উৎসবে ফিরতে নারাজ উদ্যোক্তারা
FacebookWhatsAppEmailShare
নিশিকান্তের স্থায়ী কমিটি থেকে মহুয়াকে সরাতে চিঠি তৃণমূলের
FacebookWhatsAppEmailShare
বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের আওতায় আনার প্রয়োজন নেই, সুপ্রিম কোর্টে বলল নরেন্দ্র মোদির সরকার
FacebookWhatsAppEmailShare