গঙ্গায় পদক ভাসালেন না, কেন্দ্রকে ৫ দিনের সময়সীমা কুস্তিগীরদের
অলিম্পিক্স পদক-সহ বাকি সব পদক নিয়ে বিকেল ৫টা নাগাদ হরিদ্বারে পৌঁছে যান সাক্ষী মালিকরা। একটি বাক্সে নিজেদের সব পদক বুকে আঁকড়ে হর কি পৌড়ী ঘাটে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগটেরা। তাদের ঘিরে ছিলেন পরিবারের লোকেরা। স্থানীয় অনেক মানুষ ভিড় করেছেন সেখানে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অনুরোধ করছেন এই কাজ না করতে। বেশ কয়েকজন সাধু এসে তাদের অনুরোধ করেন, কুস্তিগিরেরা যেন পদক গঙ্গায় বিসর্জন না দেন। ছিলেন কৃষক নেতারাও, তারাও আলোচনা করেন।
তারপরই সিদ্ধান্ত বদল করেন কুস্তিগিররা। কেন্দ্রকে পাঁচ দিনের সময়সীমা দিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, যদি পাঁচ দিনের মধ্যে তাঁদের দাবি না মেটে তা হলে আবার গঙ্গায় পদক বিসর্জন দেবেন তাঁরা।
তাদের এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্ৰেস। তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, কুস্তিগীররা নতুন যে জায়গায় অবস্থান করবেন, সেখানে পৌঁছে যাবে তৃণমূল সাংসদদের প্রতিনিধি দল। কুস্তিগীরদের প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন বাংলার ক্রীড়াবিদরাও। আজ ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কুস্তিগীরদের আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতার বার্তা দিতে বুধবার হাজরা থেকে রবীন্দ্র সরোবর পর্যন্ত মিছিল করবে বাংলার ক্রীড়াবিদরা।
দিল্লী পুলিশের তরফে গতকাল জানানো হয়েছিল যে যন্তরমন্তরে আন্দোলন করা যাবে না, আজ তারা নির্দেশ দিয়েছে ইন্ডিয়া গেটেও কুস্তিগীররা আন্দোলন করতে পারবেন না।
সুবিচারের দাবিতে গত রবিবার যন্তরমন্তর থেকে মিছিল করে নয়া সংসদ ভবনে যাচ্ছিলেন কুস্তিগীররা।
সেই সময় দিল্লি পুলিশ আন্দোলনকারীদের মিছিলে বাধা দেয়, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তাদের, অভিযোগ এসেছে তাদের জোর করে বাসে তোলার সময় পোশাক ছিঁড়ে দেওয়া হয় ৷ মহিলা পুলিশের নখে আঁচড়ে আহত হয়েছেন পদ্মশ্রী সাক্ষী মালিক।
সাক্ষী মালিক, ভীনেশ ফোগত এবং সঙ্গীতা ফোগত সহ বেশ কিছু আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়েছে ৷ তবে রাত্রে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ছাড়া পেয়েই সাংবাদিক বৈঠক করে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন কুস্তিগির ভিনেশ ফোগাট।
আটক থাকাকালীন তাদের প্রাইভেট ভিডিয়ো বানিয়েছে ACP, পরে তাকে দিয়ে সেই ভিডিও ডিলিট করানো হয়েছে, কিন্তু তার আগে সেই পুলিশ কর্তা ভিডিয়োগুলি কোথাও পাঠিয়ে দিয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি।
কুস্তিগিরদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার নিন্দা করেছেন সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri), নীরজ চোপড়া (Neeraj Chopra), ইরফান পাঠানের (Irfan Pathan), অনিল কুম্বলের মতো ক্রীড়াবিদরা। এই ঘটনায় সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পাওয়ার, অখিলেশ যাদব, মায়াবতী সহ একাধিক রাজনীতিবিদ।
উল্লেখ্য, রেসলিং ফেডেরেশন অফ ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে ৬ মহিলা সহ এক নাবালিকা কুস্তিগীরকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে ৷ এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দিল্লি পুলিশ এফআইআর দায়ের করলেও, ব্রিজভূষণকে গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছেন কুস্তিগীরদের একটি অংশ। ব্রিজভূষণকে অবিলম্বে ফেডেরেশনের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরানোর দাবিতে গত ২৪ এপ্রিল থেকে যন্তর মন্তরে দ্বিতীয় দফায় লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ করছেন কুস্তিগীররা ৷