কিভাবে ৬ বছরের বয়োজ্যেষ্ঠা অঞ্জলীর প্রেমে পড়েছিলেন লিটল মাস্টার
এপ্রিল 24, 2023 3 min read
রবি শাস্ত্রী, সঞ্জয় মঞ্জরেকর, মহম্মদ আজহারউদ্দিনদের ভিড়ে অনেকেই চিনতেন না ঝাঁকড়া চুলের বেঁটেখাটো ছেলেটাকে। রোজারিওর বিস্ময় বালকও একসময় বিশ্বে কাছে অপরিচিত ছিল। চিনতো কেবল তাঁর পরিবার ও ভালোবাসার মানুষ। নাম – দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। এই ছেলেকেও বেশি কেউ চিনতো না – সেখান থেকে ক্রিকেট বিশ্বের ‘ঈশ্বর’ হয়ে ওঠা। কিন্তু প্রেম?
১৯৯০ সালের মুম্বই বিমানবন্দরে ইংল্যান্ড থেকে ফেরার সময় শচীন তেন্ডুলকরকে প্রথম চোখাচুখি হয় ঞ্জলির সঙ্গে। সেই সময় ক্রিকেটের কিছুই জানতেন না শচীন-জায়া। সেদিন অঞ্জলী মুম্বই বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন তাঁর মাকে নিয়ে আসতে।
অঞ্জলী শচীনের থেকে প্রায় ৬ বছরের বড়। ১৭ বছর বয়সে সচিন যখন ভারতের জার্সি গায়ে জীবনের প্রথম বিদেশ সফরে গিয়েছেন, অঞ্জলি তখন পুরোদস্তুর চিকিৎসক। প্রথম দেখায় শচীনকে চিনতে পারেননি অঞ্জলী। পরে এক বন্ধুর বাড়িতে আবার দেখা হয় দুজনের। আলাপ, আলাপ থেকে প্রেম। নিজের এই প্রেমকে গোপন রাখলেও, ক্রিকেটের প্রতি তাঁর প্রেমকে ‘রটিয়ে দিয়েছিলেন তারায়-তারায়’।
অঞ্জলি অবশ্য পরে জানিয়েছিলেন, শচীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়ার পর ক্রিকেট নিয়ে আলাদা করে তিনি পড়াশোনা শুরু করেন। বইপত্র পড়ে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় এই খেলাকে। খেলার কিছুই না জানার বিষয়টাই আরও গাঢ় করেছিলো তাঁদের প্রেমকে। মাঠের ক্লান্তি তিনি কাটাতে পারতেন মাঠের বাইরের হাজারো বিষয় নিয়ে কথা বলে।
শোনা যায়, তাদের শান্তিতে প্রেমও করতে দেয়নি শচীনের খ্যাতি। একবার কিছু বন্ধুদের সঙ্গে ‘রোজা’ দেখতে গিয়েও ছদ্মবেশ গ্রহণ করতে হয়েছিলো লিট্ল মাস্টারকে, পাছে কেউ চিনতে পারে! মজার ঘটনা, গালে নকল দাড়ি লাগিয়ে সিনেমা হলে শচীন নিজের পরিচয় গোপন করেছিলেন, কিন্তু সেই দাড়ি মাঝপথে খুলে যায়। দর্শকরা চিনে ফেলেন তাঁদের প্রিয় তেন্ডুলকর সাহেবকে, সিনেমা হলে ভিড় জমে যায়। ফলে সিনেমা মাঝপথে ফেলেই বেরিয়ে আসতে হয়েছিল সচিন-অঞ্জলীদের।
গুজরাতের ধনী শিল্পপতি অশোক মেহতার কন্যা অঞ্জলী। বয়সের পার্থক্য প্রেমে ব্যাঘাত না, বাড়িয়ে তুলেছিলো ভালোবাসা। ৫ বছরের প্রেম পরিণতি পায় ১৯৯৫তে। ‘৯৭তে জন্মান সারা, ‘৯৯তে অর্জুন। অর্জুন এখন সে বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের খেলোয়াড়।
বিয়ের পর নিজের কেরিয়ার ছেড়ে দেন অঞ্জলী যদিও তাতে কোনো আক্ষেপ নেই তাঁর। বারংবার বলেছেন, শচীনের মতো মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করেন। শচীনও শ্রদ্ধার সিংহাসনে বসিয়েছেন স্ত্রীকে। নিজেকে আত্মজীবনীতেও লিখেছেন, জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতেও সবচেয়ে শক্তিশালী সাপোর্ট সিস্টেম হিসেবে পেয়েছেন জায়াকে। ক্রিকেটের চাকচিক্যে আড়ালেই থেকে গেছে তাদের এই প্রেমকাহিনী।