অমিত শাহ-র পর আর কেউ এল না
‘সেই যে অমিত শাহ এসে খেয়ে গেলেন, তার পর আর কেউ এল না’: শিলিগুড়ির রাজু মাহালি
সমাজের পিছিয়ে পড়া দুর্বল শ্রেণীর মানুষদের বাড়ি গিয়ে পাত পেড়ে খাওয়া আজকাল রাজনৈতিক নেতাদের ফ্যাশন না প্যাশন এ পরিণত হয়েছে তা বোঝা দায়। শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ির বাসিন্দা রাজু মাহালি। হঠাৎ করে তার নাম খবরের শিরোনামে, সৌজন্যে বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি।
তিন বছর আগে শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়িতে এই মাহালিদের ঘরেই পাত পেড়ে খেয়েছিলেন অমিত শাহ মহাশয়। রাজুর স্ত্রী গীতা রেঁধে খাইয়েছিলেন তাঁকে। উঠোন, ঘরদোর সে দিন ভরে ছিল বিজেপির লোকজনে। তারপর?
রাজু জানালেন, ‘‘সেই যে এসে খেয়ে গেলেন, তার পর আর কেউ এল না। খোঁজও নিল না কেউ।’’ তার আক্ষেপ, ‘‘আমাকে নিয়ে রাজনীতিই বেশি হয়েছে।’’ তার স্ত্রী বললেন, ‘রান্নার যে গ্যাস পেয়েছি, শেষ হওয়ার পরে অভাবে আর কিনতে পারছি না। মাটির চুলাতেই রান্না করছি।’’
তাদের মতই আজ আর এক আদিবাসী পরিবারের বাড়িতে খাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাঁকুড়া ১ ব্লকের আন্ধারথোল পঞ্চায়েতের চতুর্ডিহি গ্রামের বিভীষণ হাঁসদার বাড়ি ঘিরে এখন তাই আগ্রহ তুঙ্গে। এই খবর শুনে হাসলেন রাজু, তার অভাবী চোখ মাটির দিকে।
তার স্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার থেকেও লোকজন এসেছিল তার পরে। রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওঁদের পরিবারের এক জনের স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরি হয়েছে।
মাহালি পরিবারের কথা জানেন না বাঁকুড়ার বিভীষণ হাঁসদা। তাদের মতন দিনমজুরের বাড়িতে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাত পেড়ে ভাত খাবেন এটা তাদের কল্পনার অতীত। বিভীষণবাবুর ঘরে যখন আয়োজনের ধুম, কয়েকশো কিলোমিটার দূরে মাহালিদের আঙিনায় মাটির উনুন ঘিরে তখন অন্ধকার গাঢ় হয়ে আসছে।