দেশ বিভাগে ফিরে যান

প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে ‘অমীমাংসিত’ থেকে গেলো রাজ্যের ৫ মামলা

নভেম্বর 9, 2024 | 2 min read

সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই দেশের প্রধান বিচারপতি পদে সময় ফুরিয়ে গেল ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের। চন্দ্রচূড়ের ফেলে যাওয়া অমীমাংসিত মামলাগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মামলা রয়েছে। কবে শীর্ষ আদালতে সেই সমস্ত মামলার নিষ্পত্তি হবে, তা স্পষ্ট নয়। আগামী সোমবার দেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নেবেন বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি হিসাবে চন্দ্রচূড়ের অভিষেক ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় রায় ঘোষণা করেছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলি কখনও সাধারণ বিভাগীয় পদ্ধতি মেনে তাঁর বেঞ্চে গিয়েছে, কখনও আবার প্রধান বিচারপতি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু শুরু করলেও কিছু মামলার শেষ দেখে যেতে পারলেন না তিনি।

১. আরজি কর মামলা – ধর্ষণ ও হত্যা কাণ্ড
২০২৩ সালের আগস্টে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণের শিকার হন এবং পরে হত্যার ঘটনাটি ঘটেছিল। এই ঘটনা একেবারে গোটা রাজ্যকে নাড়া দেয় এবং এর পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা উঠে আসে। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে প্রথম শুনানি ২০ আগস্ট হয় এবং এরপর আদালত সিবিআই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে একাধিক নির্দেশনা জারি করে। আদালত হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা বাড়াতে সিসি ক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি, মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকারকে আরও পদক্ষেপ নিতে বলেছিল। তবে, মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১০ ডিসেম্বর হওয়ার কথা, কিন্তু চন্দ্রচূড়ের অবসর গ্রহণের পর নতুন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এই মামলার ভবিষ্যত কী হবে তা পরিষ্কার নয়।

২. ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল মামলার শুনানি
পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাই কোর্ট ১২ লক্ষেরও বেশি ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি) সার্টিফিকেট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল, যা পরে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ১৮ জুন শুরু হয় এবং আদালত রাজ্য সরকারের কাছে এই ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছিল। যদিও শীর্ষ আদালত এ ক্ষেত্রে হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়নি, তবে মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। রাজ্য সরকার এখনও সেই রিপোর্ট জমা দেয়নি এবং ১৩ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হতে পারে। মামলার ফলাফল রাজ্য সরকার এবং সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

৩. ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার নিষ্পত্তি
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্য সরকারের অধীনে নিয়োগ পাওয়া ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আপিল করা হয় এবং এই মামলার প্রথম শুনানি ২৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। শীর্ষ আদালত জানায়, হাই কোর্টের নির্দেশের পরিণতি স্থগিত থাকবে এবং ভবিষ্যতের রায় অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ নভেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও, এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চাকরি প্রার্থীরা অস্থির অবস্থায় রয়েছেন।

৪. রাজভবনে শ্লীলতাহানির মামলা
২০২৩ সালের জুলাই মাসে পশ্চিমবঙ্গের রাজভবনে এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। যেহেতু রাজ্যপাল সাংবিধানিক পদে রয়েছেন, তাই পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ওই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল, যেখানে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করার নির্দেশ দেয়। যদিও এই মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি এবং শীর্ষ আদালতে পরবর্তী শুনানির তারিখও এখনও স্থির হয়নি।

৫. মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি মামলা
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত মামলা আদালতে ওঠে। এখানে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চের মধ্যে ব্যাপক মতবিরোধ ছিল, যার পর সুপ্রিম কোর্টে হস্তক্ষেপ করা হয়। এই সংঘাতের পর, সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ভর্তি মামলা কলকাতা হাই কোর্ট থেকে সরিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ২৯ জানুয়ারি এই মামলার শেষ শুনানি হলেও এরপর আর কোনও অগ্রগতি হয়নি। আগামী ১৮ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হতে পারে।

FacebookWhatsAppEmailShare

আরো দেখুন

ইন্ডিয়া জোটের বয়কটের জেরে পিছিয়ে গেল জেপিসি সফর
FacebookWhatsAppEmailShare
ফের উত্তপ্ত মণিপুর, কুকি সংগঠনের বনধের ডাক, জারি কারফিউ
FacebookWhatsAppEmailShare
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে যোগ তৃণমূলের
FacebookWhatsAppEmailShare